পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
১১

যান পণ্ডিতমশাই মহারাজ কীর্তিচন্দ্রের সনন্দ আর এই অভয়পত্র। সে সঙ্গে আপনাকে দেব আরও একটি নথি, ‘দণ্ডবিধি পুথি’, আমাদের পূর্বপুরুষের সঞ্চিত আরেক ধন। অনুমান এরও বয়স দু’শো বৎসর। তবে এর আরেকটি অংশ সম্ভবত বন্ধুবর নন্দলাল বর্মন মহাশয়ের কাছে রক্ষিত আছে। আমি তাঁকে আপনার কথা বলেছি। আশাকরি তাঁর সাহায্যও আমরা পাব।

 ভেতর বাড়ি থেকে কাঁসর ঘণ্টা বেজে উঠল। আজ মঙ্গলবার। হরিনারায়ণের ভোগ লেগে গেছে। এখন অতিথি নারায়ণের সেবা।

 —ওরে কে আছিস! পণ্ডিতমশায়ের খড়ম গামছা এগিয়ে দে। জলের পাত্র নিয়ে আয়।

 বিদ্যাবিনোদ অনেকটা সময় নিয়ে বহু যত্ন করে ঠিক আগের মতো নথিগুলো গুটিয়ে দুটো কাঠের টুকরো বসিয়ে লালসালুতে মুড়ে রশি দিয়ে বেঁধে রাখলেন।

 আজ পুরোহিত বাড়ির মেয়েরা এসে রান্না করেছে এই সাত্ত্বিক ব্রাহ্মণের জন্য। এরপর তাঁকে যেতে হবে সোনাপুর, হরগোবিন্দ সেন মহাশয়ের বাড়ি। ওখানে তাঁর জন্য রক্ষিত আছে আরও একখানি অমুল্য পুথি ‘ঋণাদান বিধি’।

 জমিদারবাড়ির চর্বচোষ্য লেহ্য পেয় দিয়ে ভূরিভোজনের পর বিছানায় শরীর লাগাতে না লাগাতেই বিদ্যাবিনোদ উঠে পড়েছেন। পরিকল্পনা, পায়ে হেঁটে মেরে দেবেন সাত মাইল পথ। খবর গেল ভিতর বাড়িতে। ছুটে এলেন গৃহকর্তা। পণ্ডিত ব্যক্তিটিকে কি তিনি এমনি ছেড়ে দিতে পারেন? জেদি মানুষটি আবার পালকিতে উঠবেন না, ঘোড়ায় চড়ারও অভ্যাস নেই। অতদূর গেলে আজ ফিরে আসার সম্ভাবনাও নেই। আর পেলে সেনমশাইই বা তাঁকে ছাড়বেন কেন?