চুয়াত্তর সালের ৭ ফেব্রুয়ারি হইতেই একটি অভিশপ্ত জাতি। যে চান্স পায়, কিল মারে।
পুরো সদন নীরব। এবার প্রায় বিদ্রুপের সুরে আহমেদ সাহেব বললেন তাঁর শেষ কথাগুলো,
—‘আমি কান্দি ভাই ভাই, ভাইয়ের চক্ষে পানি নাই’, বিষয়টা তো তাই। দেখুন তো অদ্যাবধি ওদিক থেকে না আবাহন, না বিসর্জন। কেউ তো একটি সমর্থনসূচক বাক্যও উচ্চারণ করেন নি। ‘কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে ভাই বলে ডাকো যদি দেব গলা টিপে’-র মতো অবস্থা না হয় শেষ পর্যন্ত।
বিপিনচন্দ্রকে আবার দাঁড়াতে হল। তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করলেন,
—‘বাংলা আইন পরিষদে’ সিলেটের রাজা মহারাজা, উকিল মোক্তারদের কথা গ্রাহ্য হলেও আমাদের কাছাড়কে ওঁরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনবে না। তাঁর প্রশ্ন, রি-ইউনিয়ন প্রস্তাবটা নাগরিক জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হলেও গ্রামীণ জনগণ কি এতে সায় দেবে? বন্ধুবর খান পিছন সাহেব থেকে টিপ্পনি কাটলেন,
—পথো আইন, জমিদারবাবু। আগে ইতা কিতা কইছলা আমরারে না জিগাইয়া?
ব্রজেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী বিমর্ষ মুখে বসে রইলেন। অবশেষে প্রস্তাবটি যখন ভোটাভুটিতে গেল, তখন আরেক কাণ্ড, রায়বাহাদুর সিলেট রি-ইউনিয়নের পক্ষেই ভোট দিলেন। এটা কি রাশিদ আলি সাহেবের টিপ্পনির ফলেই? আবার মুখে বললেন, যদি প্রস্তাবটি পাশ হয়, আশা করবেন গভর্নর বাহাদুর এতে সম্মতি দেবেন না। যাই হোক ২২/১৮ ভোটে প্রস্তাবটি অগ্রাহ্য হয়ে গেল। কারা কারা, কোন উদ্দেশ্যে এর পক্ষে না বিপক্ষে ভোট দিলেন এ নিয়ে প্রচণ্ড সোরগোলের মধ্যে সদন ভঙ্গ