হল। বিপিনচন্দ্রের মনে হল সবাই যেন তাঁকে দায়ী করছে। হঠাৎ খান সাহেব রাশিদ আলির উপর তাঁর খুব রাগ হল। কেনই বা মোক্ষম সময়ে এরকম টিটকারি করা?
তবুও বিচক্ষণ এ উকিলের তিনি গুণমুগ্ধ। কাছাড়ের জন্য তিনি ছাড়া আর কে এত স্পষ্ট করে ভাবতে পারে? সারা পরিষদ ভবনকে সেদিন তিনিই তো স্তব্ধ করে দিতে পেরেছিলেন—বাঙালিদের অবস্থিতি নিয়ে এক চরম অবমাননাকর বিতর্কের মুহূর্তে। আজও কানে ভাসে কথাগুলো—
“আপনারা যারা প্রশ্ন তুলেছেন, কাছাড়ে বাঙালিরা কবে থেকে বাস করছে, তাঁদের আমি জিজ্ঞেস করছি, বলুন তো রোমক জাতি কবে থেকে রোম নগরীর বাসিন্দা হয়েছে? কান ভরে শুনে রাখুন, কাছাড়ের বাঙালিরা আকাশ থেকে নেমে আসেনি, বৃক্ষ থেকেও নয়, নয় আসাম ভ্যালি থেকেও। এরা এ মাটির সন্তান, এ ভূমির বাসিন্দা, সিলেট সহ বৃহত্তর বঙ্গভূমির স্বাভাবিক উত্তরাধিকারী।”
এ হেন ব্যক্তির উপর অভিমান করতে পারি, কিন্তু রাগ নৈব নৈব চ।
৩০
তৃতীয় আইন পরিষদের নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হতে না হতেই রায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্র স্থির করে ফেলেছেন, আর নয়। রাজনীতি যেমন দিনে দিনে জটিল হতে চলেছে তেমনি নিজের শরীর মনও এ থেকে বিরাম চাইছে। ওদিকে বনরাজ পরগনার মৌজাদারিও তাঁর হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয়ে গেছে। প্রজাদের থেকে খাজনা আদায়েও খুব একটা অগ্রগতি দেখাতে পারছেন না। কৃষিক্ষেত্রে তাঁর পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নেও সরকার বাহাদুর উৎসাহ দেখালেন না। এ দিকে অরণ্যের মূল্যবান সব