বৃক্ষ ধ্বংস করে দেশবাড়িতে কাঠ চালানে কোনও বাধা নিষেধ আরোপ করাও যাচ্ছে না। চা বাগানের মালিক, ম্যানেজারদের সঙ্গে কমিশনার স্তরের অফিসারদের যোগসাজসেই এটা হচ্ছে। ভুবন পাহাড়ের উপর যে হারে লোভের কুড়াল পড়ছে, বিপিনচন্দ্রের আশঙ্কা, আগামী দশ বছরেই সব মূল্যবান সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাবে। একই সঙ্গে সোনাপুর-বনরাজ আর ভুবন পাহাড়ে বন্দুকবাজ সাহেবদের হাতে সপ্তাহান্তে কাতারে কাতারে প্রাণ দিচ্ছে হরিণ, গণ্ডার, বুনো শূকর আর বুনো হাঁসের দল। সরকার বাহাদুর আর বোধহয় দেশীয় জমিদার, মৌজাদার বা জনপ্রতিনিধিদের প্রতি বিশেষ আস্থা রাখতে পারছেন না। ওদিকে খিলাফতি আর নন-কোঅপারেটরদের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসাটা নতুন গভর্নর বাহাদুর শ্রীল শ্রীযুক্ত উইলিয়ম হেনরি রেইড এবং জন হেনরি কার দুজনেই ভিন্ন চোখে দেখছেন। আর্ল কিংবা নিকোলাস বিটসন বেল সাহেবের মতো উদার মনের গভর্নর আর ক’জনই হতে পারেন?
—এদের খুশি করতে গিয়ে আমি তো আর প্রজাপীড়ন শুরু করতে পারি না।
রেভিনিউ দপ্তর থেকে ইতিপূর্বে রায়বাহাদুরকে এ মর্মে একটা সবধানবাণীও শোনানো হয়েছে, তিনি নাকি রাইয়তদের প্রতি প্রয়োজনের চাইতেও অধিক নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করছেন।
এদিকে আইন পরিষদে সিলেট রি-ইউনিয়ন প্রস্তাব অগ্রাহ্য হওয়ায় রায়বাহাদুর রমণীমোহন দাস, ক্ষীরোদচন্দ্র দেব, ব্রজেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী, আব্দুল মজিদ সাহেব, এমনকি খান সাহেব রাশিদ আলি লস্করও তাঁকে এড়িয়ে চলতে চান, যদিও তাঁরা সবাই জানেন তিনি মুখে যাই বলেন না কেন, ভোটটা ওঁদের পক্ষেই দিয়েছেন। সেদিন থেকেই তিনি স্থির করে ফেলেছেন, এ পথে আর চলার প্রয়োজন নেই।