রায়বাহাদুর ভেবেছিলেন কলিকাতা গিয়ে ডাক্তার বৈদ্য করিয়ে তারপর বাড়ি যাবেন। কিন্তু আজকাল অল্পেতেই ক্লান্তি আসে। দূরদেশে যাত্রার ধকল সইতে পারবেন কি না বুঝতে পারছেন না।
এদিকে উপযাচক হয়ে সিলেট-কাছাড়ের কংগ্রেসিরা তৃতীয় আইন পরিষদে কারা আসবেন, কারা মনোনীত হবেন এসব কথা তাঁর কানে দিচ্ছেন। এদেরই মুখে শুনলেন তাঁর অনুজ যতীন্দ্রমোহনের কথা। স্বরাজ্য দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের খুবই পছন্দের পাত্র সে। যদি এদের কথা সত্য হয়, যদি সত্য সত্যই যতি তাঁর পরবর্তীতে আইন পরিষদে সদস্য হয়ে আসে তবে তিনি শান্তিতে চোখ বুজতে পারেন। আর তাঁর ইংরেজ তাড়িয়ে দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্নের ব্যাপারে রায়বাহাদুরের কিছুই বলার নেই। এই একটি ব্যাপারে যতির সঙ্গে কোন তর্ক করার জো নেই। বয়স কুড়ি থেকেই তাঁর মাথায় এ ভাবনা। যদি আমার কথা শুনে কলিকাতায় গিয়ে সে আইনটা পড়ে আসত? বিপিনচন্দ্র এখনও ওই কথা ভাবেন, যদিও জল অনেক দূর গড়িয়ে গেছে।
ওদিকে কামিনী চন্দ মশাই কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্য হয়ে বহুদূরে। সামনাসামনি হলে যে কথাটা সহজে বলা যায়, পত্র মারফত তা বলা যায় না। কা’র সঙ্গে কথা বলে যতির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়? কংগ্রেসি বলুন, স্বরাজ্যিই বলুন আর খিলাফতিই বলুন এদের কারো কাছেই নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা যায় না।
৩১
শিলং গৌহাটি হয়ে বাড়ি আসা অবধি রায়বাহাদুরের শরীর আর জায়গায় আসছে না। বিছানায় শুতে গেলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। সারাটা দিন, সারাটা রাত ইজিচেয়ারে বসতে বসতে কোমর অবশ হবার জোগাড়।