—আই এম প্রফেসর ভটচাজ, ফ্রম কটন কলেজ, গৌহাটি। গ্লেড টু মিট ইউ ইন দিস প্লেস।
—ও থ্যাঙ্ক ইউ। ইউ আর ওয়েলকাম টু মাই এস্টেট।
বিদেশের মাটিতে এত সুন্দর ইংরেজি বলছেন ধুতি পরা লোকটি। সাহেব তো তক্ষুনি এদের নিজ বাংলোতে নিয়ে যেতে চাইছেন। কী করে বিপিনচন্দ্র নাছোড়বান্দা এ সাহেবকে বোঝাবেন যে এই ব্রাহ্মণ সন্তানকে আপ্যায়ন করার অনেক হ্যাপা আছে? নিজে অবশ্য সাহেবের দেওয়া চুরুটটি ‘থ্যাঙ্কস’ বলে গ্রহণ করলেন। বিদ্যাবিনোদের দিকে সাহেবের হাত যাবার আগেই বিপিনচন্দ্র বলে উঠলেন সাহেব যদি পণ্ডিতমশাইয়ের জন্য একটি দেশি হুঁকোর বন্দোবস্ত করতে পারেন তবেই তিনি তৃপ্ত হবেন। জমিদার বাবুর এ প্রস্তাবে সবারই এক চোট হাসি।
—আই এম আফ্রেড বাবু, ইটস ইনডিড আ চ্যালেঞ্জ ফর মি।
৫
মহামহোপাধ্যায়ের সঙ্গে সন্ধ্যের মজলিশে জমে উঠল পুরনো দিনের গল্প। সৌখিন রায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্র নিজেও ইতিপূর্বে কিছু কিছু ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন। তাই মহামহোপাধ্যায়ের কথাগুলো তাঁর প্রাণে আলোড়ন তুলল। তিনি ‘ভাটেরা তাম্রশাসনে’র প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন। সিলেটত্রিপুরার একাধিক তাম্রশাসনের কথাও বললেন। ত্রিপুরার আদি ধর্মাফার একটি শাসনের উল্লেখ তো রায়বাহাদুরের মাথা ঘুরিয়ে দিল। কী বলছেন পণ্ডিতপ্রবর? ‘ত্রিপুরা চন্দ্রবানাব্দে’ প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে কুশিয়ারা নদীর তীরে পাঁচজন ব্রাহ্মণকে কোনও এক ‘মকরন্দ রবৌ শুক্লপক্ষে পঞ্চমী দিনে’ এ নৃপতি একখণ্ড ভূমি দান করেন। হবে?
—‘ত্রিপুরা চন্দ্রবানাব্দ’? এটা বুঝি একটি সন? আমাদের হিসাবে কত হবে?