—৬৪১ খ্রিস্টাব্দ।
দুই মনীষী রায়সাহেব কনকলাল বরুয়া আর রাধাগোবিন্দ বসাক এ সন নির্ধারণ করেছেন। তিনি এও জানালেন, সপ্তম শতকের কুটিলাক্ষরে লিখিত ওই তাম্রশাসনটি ত্রিপুরা মহারাজের সুপারিনটেনডেণ্ট মারফত এশিয়াটিক সোসাইটিতে এসেছিল।
বিস্ময়ের বুঝি আরও বাকি ছিল। বিদ্যাবিনোদ পর্শি হুঁকোর নলে একটা দীর্ঘ টান দিয়ে ঘরময় খাম্বিরার গন্ধ ছড়িয়ে দিয়ে শুরু করলেন,
—যে কারণে আজ সকালে আমরা এতটা পথ পাড়ি দিয়ে সুবঙ্গ বাগান পর্যন্ত ঘুরে গেলাম এ কথাটি আজ ‘ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে’ এই গ্রামে বসে আপনাকে বলারই মোক্ষম সময়।
বিদ্যাবিনোদের বর্ণনায় মূর্ত হয়ে উঠল ইতিহাসের আরেক অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়। আসন্ন দোল উৎসবকে সামনে রেখে গ্রামের প্রান্তে কারা যেন ঢোলক কাল সহযোগে হোলি গাইছে আর টুকরো টুকরো পদগুলো ভেসে এসে ঘরের ভেতর সবাইকে উন্মনা করে দিচ্ছে, ‘আইজ হোরি খেলব রে শ্যাম তোমার সনে’।
বিদ্যাবিনোদ একটু থেমে আবার সপ্তম শতাব্দীতে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গ-সমতটের সামন্ত রাজা লোকনাথের ত্রিপুরী তাম্রশাসনে উল্লিখিত ‘জয়তুঙ্গবর্ষের অন্তর্গত ‘সুবঙ্গ বিষয়া’য় শ্রীশ্রীঅনন্ত নারায়ণের মন্দির এবং একশো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের বসতির জন্য একখণ্ড নিষ্কর ভূমিদানের কথা শুরু করেছেন।
বিমূঢ় বিপিনচন্দ্রের প্রশ্ন,
—আজ্ঞে এই ‘জয়তুঙ্গবর্ষ’টি কোথায়? ‘সুবঙ্গ বিষয়া’র অর্থই বা কী? বিদ্যাবিনোদের উত্তর,
—এর উত্তর কি এত সহজে দেওয়া যায়? কত কত মনীষী এ অনুসন্ধানে কালাতিপাত করছেন।