পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

 আমি বলি, রায়বাহাদুর মশাই, জয়তুঙ্গবর্ষ কি জাতিঙ্গা বা জাটিঙ্গার পোশাকি নাম হতে পারে না? আপনার বিষয় সম্পত্তির একাংশ নিয়েই হয়তো বা এ ‘সুবঙ্গ বিষয়া’, যা আপনার বদৌলতে আজ দেখে এলাম। সে অর্থে এই গ্রামের নাম জয়তুঙ্গ বা জয়তুঙ্গবর্ষ হওয়াই সঙ্গত।

 রাত বেড়ে চলল। অতিথিশালার রন্ধন পর্বও শেষ অনেকক্ষণ। ঠাকুরঘরের দিকে যেতে যেতে পণ্ডিতমশাই মনে করিয়ে দিলেন আগামীকাল তাঁর বিদায় নেবার কথা। তবে যাবার আগে গ্রামের দুই দেবী রণচণ্ডী আর নির্মাতার কথা তাঁকে শোনাতে হবে। '


রাজার মৃত্যুর পর সাহেবরা মধুরা নদীর তীরে বার্মাযুদ্ধের সেনানায়ক কর্নেল ঈনিশের ঘাঁটি দুধপাতিল গ্রামে কুঠি বানিয়ে এদিকের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এবার ফিশার সাহেব দুধপাতিল ছেড়ে বরাক নদী পেরিয়ে অম্বিকাপুর পরগনার জানিগঞ্জ বাজারসংলগ্ন এক টুকরো জমিতে কার্যালয় স্থানান্তরের আয়োজন করলেন। বরাকের তীরে বাজার, খেয়াঘাট সংলগ্ন ওই স্থানটি নাকি মহারাজ গোবিন্দচন্দ্রই মৃত্যুর কিছুদিন আগে অম্বিকাপুর মিরাশদারের হাত থেকে খাস করিয়ে নিয়েছিলেন। হরিটিকরে অস্থায়ী রাজপাট গুটিয়ে সরাসরি খাসপুরে ফিরে যেতে তিনি ভরসা পাচ্ছিলেন না। ক্যাপ্টেন ফিশার অবশ্য এত সহজে সদর কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজটি সম্পন্ন করে উঠতে পারছেন না। রাজার মৃত্যুর পর এই মিরাশদার জানিগঞ্জ তালুকের উপর তাঁর অধিকার পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়ে ফিশারকে বাধা দেন। বিষয়টি বহুদূর পর্যন্ত গড়ালেও প্রায় জবরদস্তি করে সাহেব এখানেই সদর কাছারি গড়ে তোলা সাব্যস্ত করেন। যাঁদের পেছনে রয়েছেন খোদ ইংল্যাণ্ডেশ্বরী, যাঁদের নির্দেশ আসছে লর্ড উইলিয়ম বেণ্টিঙ্কের ভদ্রাসন ফোর্ট উইলিয়ম থেকে, এদের এই নেটিভ মিরাশদারকে তোয়াক্কা না