পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
২৬

 —আপনার সঙ্গে কবে তাঁর সাক্ষাৎ হয়?

 —মৃত্যুর এক বছর পূর্বে, ১৩০৮ বঙ্গাব্দেই হবে।

 পদ্মনাথবাবু তখনও কটন কলেজে যোগদান করেন নি, তবে অধ্যাপক মহলে তাঁর যাতায়াত ছিল। স্যার হেনরি কটনের নামাঙ্কিত কলেজটির উদ্বোধনীতে শিলং গৌহাটির বিশিষ্ট বিদ্বান এবং বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের সঙ্গে পদ্মনাথেরও নিমন্ত্রণ ছিল। ইতিমধ্যে স্বয়ং স্যার হেনরি কটন অধ্যক্ষ ফ্রেডরিক উইলিয়ম স্যণ্ডার্সনকে উদীয়মান পণ্ডিত পদ্মনাথের কথা বলে রেখেছেন। স্বামীজি এরই মধ্যে কটন সাহেবের আমন্ত্রণে শিলং কুইণ্টন হলে একটি বক্তৃতাও করে এসেছেন। গৌহাটিতে এক ভাড়া বাড়িতে অসুস্থ বিবেকানন্দের সঙ্গে বিদ্যাবিনোদের প্রথম সাক্ষাৎকার খুব সুখপ্রদ হয়নি বলাই বাহুল্য। আসলে ইতিপূর্বেই পণ্ডিত মহোদয়ের তীব্র আক্রমণাত্মক লেখাগুলো স্বামীজির কাছে কেউ পৌঁছে দিয়েছে।

 —বারান্দায় একখানা টুলের উপর গৌরবর্ণ গেরুয়া ধুতি ও গেঞ্জি পরা একজন লোক বসে আছেন। চুলগুলি এলোমেলো, পান চিবিয়ে ঠোঁটগুলো লাল—এই হল পদ্মনাথবাবুর বিবেকানন্দ বর্ণনা।

 ভট্টাচার্য মহোদয় স্বামীজির মাংসভক্ষণ আর ফরাসি সংগীতের প্রতি অনুরাগ নিয়ে ইতিপূর্বে কটাক্ষ করেছিলেন,

 —ফরাসি সংগীতে বৈরাগ্যের উপাদান আছে কি না জানি না।

 দুই কৃতীপুরুষের সম্মুখ সমরের রণাঙ্গন যেন প্রস্তুত হয়েই ছিল। ফরাসি সংগীত মুগ্ধতা নিয়ে কটাক্ষের উত্তরে স্বামীজি বলে ওঠেন,

 —এই যে আপনার গলায় পৈতা, জানেন এটা যে পারশিকদের কাছ থেকে পাওয়া?

 আর যায় কোথা? কথাটি বিদ্যাবিনোদকে রীতিমতো উত্তেজিত করে তুলল। তিনি রাগত স্বরে উচ্চারণ করে উঠলেন ‘যজ্ঞোপবীতং পরমং পবিত্র’ মন্ত্র। স্বামীজি সরাসরি তীর নিক্ষেপ করলেন,