—দেখুন এ মন্ত্র প্রক্ষিপ্ত, মন্ত্রটির শব্দ ও ছন্দ অর্বাচীন।
এমতাবস্থায় আর কোনও তাত্ত্বিক আলোচনা চলতে পারে না, বলাই বাহুল্য।
রায়বাহাদুর প্রসঙ্গান্তরে আর যেতেই চাইছিলেন না। এ হেন পণ্ডিতের সান্নিধ্য এবং তদুপরি তাঁর মুখে স্বামীজিপ্রসঙ্গ যে তাঁর কাছে পরম প্রাপ্তি, হোক না প্রসঙ্গটি একটু তিক্তই। বাকি কথাগুলোও বলে নিয়ে বিদ্যাবিনোদ মনের খেদ মেটালেন। তিনি বিবেকানন্দের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের কথাও বললেন। কয়েক দিন পর স্বামীজি কটন কলেজে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন বক্তৃতা করতে। পদ্মনাথও গিয়ে শ্রোতার ভিড়ে একটা জায়গা করে বসলেন। স্বামীজি সেদিন যথেষ্ট অসুস্থ। পদ্মনাথের উপস্থিতি অবশ্য তাঁর চোখ এড়ায়নি। শ্রোতাদের কাছে নিবেদন রাখলেন কী বিষয় নিয়ে বলবেন? সবাই নিরুত্তর। এত বড়ো বাগ্মী সন্ন্যাসীর সামনে কেই বা মুখ খুলবে? তিনি বললেন,
—সেই ভট্টচার্জি কোথায়?
ওদিক থেকে কোনও উত্তর না আসায় অগত্যা তিনি সেই হাঁড়ি ধর্ম, জাতি বিচার, ছুৎমার্গ এসব নিয়েই শুরু করলেন। আসলে এ নিয়েই তো বিদ্যাবিনোদের গোঁসা। স্বামীজির কথাগুলো বড়ো তীর্যক। আর কী সব পরামর্শ? না, জড়তায় দেশ উৎসন্নে যাচ্ছে, ‘বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু একটা করো’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
—আমি নীরবে সব সহ্য করলাম। একেবারে সন্ন্যাসীপ্রবরের শেষ কথাগুলো পর্যন্ত...। ইনি উপদেশ দিচ্ছেন, ‘নাহয় বড়োদরের একটা চুরি ডাকাতি করেই বুদ্ধি খোলো’।
বিপিনবাবু চুপ করে শুনেই যাচ্ছেন,
—সে দিন আমার কী মনে হয়েছিল জানেন? মনে হয়েছিল ইনি ইনি ধর্ম নয়, রাজনীতি প্রচারের যোগ্য ব্যক্তি। এত অসাধারণ বাগ্মিতা,