ইতিবৃত্ত’। বিপিনচন্দ্রের দপ্তরে এখন পুথি আর পুথি। ছাপা গ্রন্থ এসে হস্তলিখিত পুথির জায়গা দখল করে নিল। ভেসে গেল জমিদারির তৌজি, বাকিজায়, জমাবন্দির কাগজ। বিদ্যাবিনোদের সাহচর্য তাঁকে আগ্রহী করে তুলছে প্রপিতামহদের সম্পর্কে। এটা তো একটা পরিবারের নয়, একটা প্রান্তিক ভূমির ইতিহাস। কী ক’রে এরা এদিকে এসে বসতি করলেন, এবং কবে? এখানকার রাজসভার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে তাঁর কৌতূহল বেড়ে চলল। বয়স্কদের সঙ্গে কথা বলে খাসপুর সিংহাসনে নৃপতিদের একটি তালিকা তৈরি করতে বসে দেখলেন কাজটি মোটেই সহজ নয়। গোবিন্দচন্দ্রের আগে কৃষ্ণচন্দ্র, এর আগে লক্ষ্মীচন্দ্র পর্যন্ত যাওয়া গেল। কিন্তু এর আগে? তিনি কিন্তু থেমে গেলেন না। দিন কতক অনুসন্ধান করে সংগ্রহ করতে পারলেন অনেক নাম—হরিশ্চন্দ্র, রামচন্দ্র, সন্দিকারি, সুরদর্প, তাম্রধ্বজ নারায়ণ। আর কোথায় যায়? বিপিনচন্দ্র পিছন দিকে যেতে যেতে পৌঁছে গেলেন দ্বিতীয় পাণ্ডব পর্যন্ত। হাতে এল ১০৩টি নামের তালিকা। পাঠিয়ে দিলেন বিদ্যাবিনোদের কাছে। এর সত্যাসত্য নির্ণয়ের কাজ তো ঐতিহাসিকের।
একই সঙ্গে আরেকটি কাজও করে নিলেন। পারিবারিক তর্পণের তালিকা দেখে দেখে নিজ পূর্বপুরুষের তালিকা। পিতার নাম ভৈরবচন্দ্র, পিতামহ ভবানীপ্রসাদ, প্র-পিতামহ হৃদয়রায়, বৃদ্ধ পিতামহ যাদবরায় আর অতিবৃদ্ধ প্র-পিতামহ রতিরায় যিনি হেড়ম্ব রাজ-মন্ত্রী মণিরামের ষষ্টিতম ভ্রাতা। উজান বেয়ে পাঁচ সিঁড়ি গিয়ে দেখলেন নিজেকে গণনায় নিলে এ নথি হয়ে গেল ষষ্ঠীপুরুষ নামা। নিয়ে গেলেন পুবের বাড়ির খুড়ামহাশয়ের কাছে। নায়েব গগন মজুমদার বের করে দিলেন আরেকটি তর্পণের তালিকা। তিনি বুঝতে পারছেন না, পিতৃপক্ষের তো এখনও দুই মাস বাকি, এখন এসবের কী প্রয়োজন? খুড়া মহাশয় অবশ্য খবর পেয়েছেন তাঁর বিচিত্র খেয়ালি এ ভ্রাতুষ্পুত্র এখন পণ্ডিতসংসর্গ করছে। নিজের তো