দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছে, তবে স্মৃতিশক্তি এখনও প্রখর। মুখে মুখেই বলে দিলেন আমার পিতা জয়কৃষ্ণ, পিতামহ শান্ত রাম, তস্য পিতা অর্থাৎ প্র-পিতামহ রামকৃষ্ণ, বৃদ্ধ প্র-পিতামহ জোড়ারায়। ইনি হলেন মণিরামের চতুর্থ ভ্রাতা।
—তবে লিখে রাখ এর উপরের আরও পাঁচ সিঁড়ির নাম। নীচ থেকে উপর দিকে গেলে মণিরাম, জোড়ারায়, রতিরায়ের পিতা চান্দলস্কর, তস্যপিতা লক্ষ্মীচন্দ্র, তস্য পিতা ত্রৈলোক্য রায়, তস্য পিতা কালারায়, এবং এর উপর হলেন জোড়ারায়। এই নামটি পাঁচ পুরুষ পরে দ্বিতীয় বার ফিরে এসেছে।
খুড়া মহাশয় জগমোহনবাবু বললেন,
—আমার পিতা অবশ্য এর উপরের কয়েকটি নামও বলতে পারতেন। কিন্তু তর্পণ বিধিতে এর আর প্রয়োজন হয় না, তাই রাখা হয় নাই। এবার বিপিনচন্দ্রের প্রকৃতই মাথা ঘুরে যাবার কথা।
—এমনি পিতৃপুরুষের নামের উপর ভর করে পিছনে দিকে হাঁটলে তো এক অনন্ত অতীতের মুখোমুখি হব। আমরা কোথা থেকে, কোন প্রাচীন, সুদূর অতীত কাল থেকে এলাম?
একা ঘরে বসে ইচ্ছে করছে এখনই ওই পণ্ডিত লোকটির সঙ্গে দু’দণ্ড কথা বলি। জিজ্ঞেস করি,
—মহামহোপাধ্যায় পদ্মনাথ বিদ্যাবিনোদ মহাশয়! বলুন তো, আপনি আমাকে কোন্ দিকে টেনে নিয়ে যেতে চান? আমি অতি সাধারণ এক সংসারী, বিষয়ী মানুষ। বিষয়সম্পত্তির মোহজালে আটকে আছি। এই তো ভালো ছিল। আপনি আমাকে কোন্ পথে টানছেন?
ইদানীং বিদ্যাবিনোদের নাকি ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। নিয়মিত ভাবে পত্রের উত্তর দিতেও পারেন না। বিপিনচন্দ্রের কয়েকটি নথি রয়েছে তাঁর হেফাজতে। কথা ছিল পাঠোদ্ধার করে, লিপিকর দিয়ে নকল করিয়ে, ফটোগ্রাফ উঠিয়ে