সন্তান গৃহত্যাগী, নির্বাসিত বিপিনচন্দ্র পালের পক্ষে কাছাড়ের বিপিনচন্দ্রকে আপন করতে বিলম্ব হল না। দুই বিপিনচন্দ্র একান্তে বসলে কাছাড়ি জমিদার-বিপিনচন্দ্র বাগ্মী-বিপিনচন্দ্রের কাছে ক্ষুদিরামের ফাঁসি বিষয়ক গানটির প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন। জানালেন তাঁর অনুজের কণ্ঠে শোনা গীতটির স্বয়ং পদকর্তার সাক্ষাৎ পেয়ে তিনি বিশেষ পুলকিত। গীতটির ভণিতা অংশটি উদ্ধার করলে বিপিন পাল কিছুক্ষণ স্থির হয়ে রইলেন। সত্যিই কি গানটি তিনি লিখেছেন? মনে করতে পারছেন না—
‘কেঁদে বিপিন পালে বলে
বুক ভেসে যায় নয়ন জলে।’
কয়েক বছর আগেকার কাছাড় পরিক্রমণের কথা তাঁর মনে আছে। বন্ধুবর কামিনীকুমার চন্দের কুশল মঙ্গলাদিও জিজ্ঞাসা কলেন। এমনি করে স্বাধীনতা আন্দোলনের ডাক যে গানের সুরে গ্রামকাছাড়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে এটা অনুভব করে তাঁরও চোখে জল এসে গেল।
যে উদ্দেশ্যে কলিকাতা আগমন তা শুনে উচ্চারণ করলেন একটি নাম। বললেন,
—আপনি নিশ্চিত থাকুন, এক রাসবিহারী ঘোষ ছাড়া কলিকাতা হাইকোর্টে তাঁর সমকক্ষ আর কেউ নেই। এ আইনজীবীর নাম তারাকিশোর চৌধুরী। ইনিও শ্রীহট্টের সন্তান,
—আমি ঠিকানা লিখে দিচ্ছি, আপনি আজই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন।
৯
তখনও ডিমাসা রাজপাট মাইবঙ থেকে খাসপুরে স্থানান্তরিত হয়নি। আহোমরাজ রুদ্র সিংহের সেনার হাতে বিধ্বস্ত মাইবঙ রাজপ্রাসাদ। মহারাজ তাম্রধ্বজনারায়ণ রাজধানী ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন সমতল কাছাড়ে বিক্রমপুর পরগনার এক গ্রামে। গ্রামের নাম দিলেন হাওয়ারমা, অর্থাৎ বিস্তৃত মাঠ। নিরাপত্তার জন্য