পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
৩৫

স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় সুদৃঢ় গড় বেঁধে অস্থায়ী রাজপাট গড়ে তোলা হল। স্থানটি পরিচিতি পেল ‘গড়ের ভিতর’ নামেও।

 ইতিপূর্বে রায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্রের আদিপূর্বপুরুষ, লক্ষ্মীচরণের সন্তান চান্দলস্কর ভাগ্যান্বেষণে এসে এই বিক্রমপুর-সোনাপুর অঞ্চলেই উপস্থিত হয়েছিলেন। শোনা যায় তিনি বঙ্গদেশের তরফ পরগনার লস্করপুর গ্রামের সন্তান, তাই নামের সঙ্গে এ লস্কর উপাধি। এই ব্যক্তির সঙ্গে মহারাজ তাম্রধ্বজনারায়ণের সখ্য গড়ে উঠল। একজন গৃহত্যাগী ভাগ্যান্বেষী, অপরজন রাজ্যহারা, দিশাহারা, দুর্ভাবনায় আক্রান্ত।

 অবশেষে কোচ রাজদুহিতা মহারানি চন্দ্রপ্রভার দৌত্যে মহারাজ নিজ রাজধানীতে ফিরে গেলেও চান্দলস্করের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক চুকে যায়নি। প্রমাণ হিসেবে পাওয়া গেল ১৬৫৬ শকাব্দের ২৯ ভাদ্র তারিখে মহারাজ কীর্তিচন্দ্র প্রেরিত একখানি সনন্দ, সঙ্গে একখানি অভয়পত্র। মাইবঙের এ মহারাজ চান্দলস্করের পুত্র মণিরামকে রাজ্যের প্রশাসন এবং রাষ্ট্র পরিদর্শনকল্পে উজির পদে নিযুক্তি দিলেন।

 প্রাচীন লিখনপদ্ধতি এবং বাক্যগঠনের কুহেলি সরিয়ে বিদ্যাবিনোদ এ লিপির যা কিছু পাঠোদ্ধার করতে পেরেছেন এতে বোঝা গেল মহারাজ উজির মণিরামকে প্রভূত সম্পত্তি এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার অধিকারী করে রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করার প্রয়াস পান:

আমার বংশেত জত দিবস রার্জশ পদ আছে
অত দিবস জদ বুনিয়াদ বংশাবলি হাকিমইতি
তুমারে দিলাম
এতে তুমার আইল শিমা বিশএত যে হিংশা করে
তার প্রাণ রৈক্ষা না করিমু

 বিপিনচন্দ্র আরও পুলকিত হলেন এটা বুঝতে পেরে যে, এ অভয়পত্রের বয়ান বলছে—