Produced before me— the 24th March 1831—T.Fisher— In Charge of Cachar
মনে হল সাতকরাকান্দির জমিদারের পরাজিত হওয়ার মধ্যেও একটা গৌরব আছে। তবে জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করা খুব সহজ কর্ম নয় তাও জানি। সাহেবরা সোনামিঞাঁ চৌধুরীকে অবশ্য সাত ঘাটের জল খাইয়েই ছেড়েছে। প্রজা নির্যাতন, বলপূর্বক ধর্মান্তর করণ ইত্যাদি মামলায় তাঁকে জেরবার করে ছেড়েছে। এরও আগে আরেক বিদ্রোহী নবাব গুলু মিঞাঁকেও দমন করা হয়েছিল কঠোর হাতে। সেটা অবশ্য সাহেব নয়, মহারাজ গোবিন্দচন্দ্রের আমলের কথা।
প্রায় এক শতাব্দী পর এই সাহেবদের বদান্যতায় বিপিনচন্দ্র সোনাপুর বনরাজ পরগনার মৌজাদারি লাভ করে সাতকরাকান্দি এলে সোনামিঞাঁ সম্বন্ধে কত কথাই না শুনলেন লোকমুখে। এ বিদ্রোহী নিজের বাড়িতে নাকি কামান বসিয়েছিলেন। জমিদারি এলাকায় লেনদেনের জন্য ধাতুর মুদ্রাও গড়িয়ে নিয়েছিলেন। এক বৃদ্ধের মুখে শুনলেন,
—“সোনামিঞাঁ চৌধরিয়ে কইলা ‘হাওরর পানি কাইত’, সবাই কইলা উচ্চ রবে ‘হাওরর পানি কাইত’।”
দশ দশটি হাতি গিয়েছিল জিল্লা ফাটকে, যেদিন এই ব্যক্তি খালাস হলেন ইংরেজের জেল থেকে। সে সব আজ আশি বছর আগেকার কথা। মানুষ বলেন যেন এই সেদিনের ঘটনা।
সরকারি খেতাব লাভের পরও বিপিনচন্দ্র এ সাহসী জমিদারের প্রশংসা না করে পারেননি। অনুজ ভ্রাতার তীব্র ইংরেজ বিদ্বেষ দেখে মনে মনে বলেন, কেমন হত যদি সেদিন জমিদারির ভার থাকত এই যতির হাতে? লর্ড উইলিয়ম বেণ্টিঙ্ক আর তাঁর অধস্তন ডেভিড স্কট আর তস্য অধস্তন ক্যাপ্টেন টমাস ফিশার কি এত সহজে, একেবারে বিনা যুদ্ধে এ মুলুকের মালিক হয়ে যেতেন?