পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

১০

নদীর তীরে চুন সুরকি ইট দিয়ে তৈরি একেবারে হেড়ম্ব স্থাপত্য শৈলীর আদলে গড়া একটি একচালা বিশিষ্ট মন্দির। এখানে প্রতিষ্ঠিতা দেবী নিমাতা। ঠিক নদীর অপর পারে প্রায় সমান্তরাল ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে দেবী রণচণ্ডী মন্দির। রাজ পরিবারের সঙ্গে গভীর ভাবে সম্পর্কিত এ মন্দির অবশ্য একেবারে সাদামাটা। কাঁচা ঘরে দেবী-প্রতীকী একটি স্বর্ণ অসী পূজিতা হয়ে আসছেন। এ অসী অবশ্য মন্দিরের পূজারি ছাড়া আর কারও দেখার অনুমতি নেই। কাহিনি আছে হেড়ম্ব রাজ্যের এক দুঃসময়ে দেবী মহারাজকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করতে আদেশ করেন। তাঁর নির্দেশে মহারাজ নদীতে এক ভীষণদর্শন সর্পের সম্মুখীন হন। কথা ছিল যে সর্পের মস্তক স্পর্শ করলে প্রাপ্ত হবেন একটি দেবী মূর্তি। কিন্তু ভয়চকিত সম্রাট কোন মতে সর্পের লাঙুলে হাত ঠেকাতেই সক্ষম হলেন। প্রাপ্তি হল এ স্বর্ণঅসী। আশ্বাস পেলেন মহারাজ, রাজ্যে দেবীকল্প হিসেবে এ অসীই তাঁদের দুর্দৈব, যুদ্ধ বিগ্রহ থেকে রক্ষা করবেন।

 বিপিনচন্দ্র শৈশব থেকে শুনে আসছেন এসব কাহিনি। লোকের বিশ্বাস, হরিটিকরে যে-অভিশপ্ত শেষ চৈত্র দিন ১২৩৭ বঙ্গাব্দে গুপ্তঘাতকের হাতে মহারাজ গোবিন্দচন্দ্রের মৃত্যু হয় ওই দিন দেবীর আশীর্বাদসূচক স্বর্ণ অসীটি অস্থায়ী রাজধানীতে ছিল না। গুপ্তচরের মুখে বিপদের সংকেত পেয়ে এ ঘটনার পূর্বদিনই রানি ইন্দুপ্রভা সহ অসীটি মহারাজা প্রেরণ করেন যাত্রাপুর গ্রামে। এই যাত্রাপুর থেকে কী ক’রে রণচণ্ডী স্থান পেলেন জাটিঙ্গার পুব পাড়ে সে অবশ্য অন্য ইতিহাস।

 আপাতত বিপিনচন্দ্রের প্রয়োজন নিমাতার ইতিহাস। এবং এ জন্য প্রয়োজন বিদ্যাবিনোদের সঙ্গে সংযোগ করা। কিন্তু এত শীঘ্র তো তা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁর কাছে যে রয়ে গেছে কয়েকটি নথি। তবে তিনি যে কথা রাখেননি, তাও বলা যাবে না। নথিগুলোর নিখুঁত তৈলচিত্র, সে সঙ্গে