কোনও বস্তুগত প্রমাণ নেই। নিঃসন্তান কমলচরণ উজির যে তাঁর তালুক মা নির্মাতার নামে উৎসর্গ করে গেছেন, এরই বা গ্রহণযোগ্য তথ্য প্রমাণ কোথায়? ওই তালুকটির অবস্থিতিই বা কোথায়? সত্তর আশি বছরের ব্যবধানে সব কিছু যে উলটপালট হয়ে গেছে।
কামিনীবাবু ধীর মস্তিষ্কের মানুষ। তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে বিপিনচন্দ্রের কথাগুলো শুনলেন।
—দেখুন বিপিনবাবু, সত্য নিজে থেকে ধরা দেয় না। সত্যকে খুঁজে পেতে ধরে এনে প্রতিষ্ঠা করতে হয়।
বলতে পারেন সত্যই ঈশ্বর, অনেক সাধনায় তাঁকে ধরা যায়, আবার যায়ও না।
বালাধন মামলা বিজয়ী বিখ্যাত এ ব্যক্তির কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছেন না বিপিনচন্দ্র। ঈশ্বরতত্ত্ব শুনবার ধৈর্য আর মানসিকতা কিছুই তাঁর নেই।
বিপিনবাবুর বিমূঢ় দশা দেখে কামিনীবাবু হেসে উঠলেন,
—শুনুন জমিদারবাবু, আপনি যেমন তথ্যের অভাবে অন্ধকারে হাতড়াচ্ছেন, আপনার প্রতিপক্ষ তেমনি ইতিমধ্যে অন্ধকারেই একটি ঢিল মেরেছেন। এবার আপনার মারার পালা। কতটুকু তথ্য আপনি সংগ্রহ করতে পেরেছেন, মানে কিছু তো পেয়েছেন, তাই না...?’
—সে তো পারিবারিক কথা, মুখে মুখে প্রচারিত, কিছু কল্পকাহিনি।
—আরে মশাই, যখন কোনও বস্তুগত ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই, তখন লোকশ্রুতিই প্রামাণ্য সূত্র, অবশ্য যদি যুক্তির ধোপে টিকে। আর, আপনি যে ঘাটে নৌকা ভিড়িয়েছেন, এ ঘাট থেকে খালি হাতে কেউ আসে না।
বিপিনবাবু সিধা কথার মানুষ। এত উপমা দিয়ে বলা কথা বোঝার মানসিক অবস্থায়ও এই মুহূর্তে তিনি নেই। সুচতুর কামিনীকুমার চন্দ এবার স্পষ্ট করেই বললেন,