পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গৌহাটিতে সংবর্ধনা জানাতেও তাঁর প্রবল অনীহা। গৌহাটির অসমিয়া আইনজীবীরাও নাকি এ নিয়ে বিদ্যাবিনোদের উপর ক্ষুব্ধ। ইনি নাকি শেখ ব্রাদার্সের রুটি খাওয়ার অপরাধে নিজ পুত্রকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। বিপিনবাবুর কথা নয়। দু’একটি সৌজন্যমূলক কথা বলে তিনি বিদায় নিলেন প্রসন্ন চিত্তে। কাল সকালেই দপ্তর মেলে বসতে হবে।


১১

মা নির্মাতাকে স্মরণ করে আজ সকাল থেকে অফিস ঘরে দপ্তর মেলে বসেছেন রায়বাহাদুর মশাই। এ কাজও করতে হচ্ছে—ইতিহাস প্রণয়ন। প্রয়োজনে সবাইকেই সব কাজ করতে হয়, এটা বুঝেছেন তিনি। বিদ্যাবিনোদের সাহচর্য তাঁকে একটা জিনিস শিখিয়েছে, সত্যের অনুসন্ধানে পেশা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনও প্রতিবন্ধক হতে পারে না। মূলত সংস্কৃত আর ইংরেজি বিদ্যা নিয়ে বিদ্যাবিনোদ মশাই এসেছেন সিলেট-কাছাড় আর কামরূপ অনুসন্ধানে। প্রয়োজনে তাঁকে লিখতে হচ্ছে অসমিয়া, বাংলা এবং ইংরেজি, বুঝতে হচ্ছে ফার্সি দলিলের ভাষা, রপ্ত করতে হচ্ছে আরবি হরফ। মাইবঙে গিয়ে মনে হল কাছারি অর্থাৎ হেড়ম্ব বা ডিমাসা ভাষাটা যদি রপ্ত করতে পারতেন ভালো হত। যেখানে যান সঙ্গে রাখেন ভূগোলের বই, মানচিত্র, অভিধান এবং কাব্য ব্যাকরণ গ্রন্থও। দেখা যাক্ রায়বাহাদুর ইউরোপীয় পাদ্রির কাছে ইংরেজি পাঠ, সিলেটের মধ্যবঙ্গ স্কুলের বাংলা বিদ্যা নিয়ে কতদূর এগোতে পারেন। তবে এখানে ভাষা আর অলংকার নয়, তারাকিশোরবাবুকে জ্ঞাতব্য তথ্যগুলো সাদামাটা ভাষায় জানিয়ে দেওয়া—এটাই প্রধান কাজ।

 এত দিন মা কাকি জ্যেঠি পিসি এবং খুড়া জেঠা আর পুবের বাড়ির গুরু পরিবার কালাইনের দেশমুখ্যবাড়ির প্রাচীনদের মুখে যা শুনে এসেছেন