পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
৪৫

নিজেদের প্রাণের কথাও বলেন মহারাজ তাম্রধ্বজ নারায়ণ।

 বিপিনচন্দ্রের বুঝতে অসুবিধা হয় না, কেন এই মহারাজের পৌত্র কীর্তিচন্দ্র তাঁর পুত্র মণিরামকে নিজ পারিষদ হিসেবে গ্রহণ করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত মণিরাম পৈত্রিক সূত্রে একই সঙ্গে শাক্ত এবং বৈষ্ণব মতের অনুগামী। কিন্তু আশেপাশে এমন কোনও দেবস্থান নেই, নেই কোনও প্রতিষ্ঠিত দেবতাও, সম্পদে বিপদে যার পদতলে দু’দণ্ড শান্তি লাভ করতে পারেন, ফিরে পেতে পারেন মনোবল। শুনেছিলেন কোন অতীতে, সহস্রাব্দ কাল পূর্বে এখানকার সুবঙ্গ বিষয়ায় এক অনন্ত নারায়ণের মন্দিরের কথা। কিন্তু উজিরের কোনও অনুচর অরণ্যসঙ্কুল পূর্ব তীরে কোনও মন্দির বা দেবস্থানের চিহ্নও খুঁজে পেল না। এমন সময়েই এ অভাবনীয় স্বপ্নদর্শন। ‘সদা বাসন্তী জ্ঞানচক্ষু উন্মিলনী সর্বমঙ্গলকারিনী’ দেবীর আবির্ভাব।

 কী ক’রে কোনও এক মাঘী পূর্ণিমার দিন মহারাজার অনুমতি নিয়ে পাত্র মিত্র কূলপুরোহিত সহ নিমাতা পাহাড় থেকে দেবীর প্রতীকী এক পবিত্র প্রস্তরখণ্ডকে সমতলে নামিয়ে এনে প্রতিষ্ঠা করা হল—এ ইতিহাস লোকমুখে আজও প্রচলিত রয়েছে। সর্বজন স্বীকৃত এ ইতিহাসকে কী ক’রে জেলা আদালতে অস্বীকার করা হল এটাই রহস্য।

 কোনও নিজস্ব মতামত আরোপ না করেই রায়বাহাদুর ঠিক যেমনটি শুনেছেন তেমনটিই লিপিবদ্ধ করলেন, যেমন পরামর্শ দিয়েছিলেন কামিনীকুমার চন্দমশাই। কলিকাতা যাবার আগে যদি পদ্মনাথ বিদ্যাবিনোদ মহাশয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মূল নথিগুলো সংগ্রহ করা যেত! অবশ্য মুদ্রিত গ্রন্থে তিনি যে ভাবে সব ক’টি নথি সন্নিবিষ্ট করেছেন এটাকে অস্বীকার করাও বেশ কঠিন কাজ হবে। তবুও মহারাজের সনন্দ দু’খানির প্রতিলিপি করিয়ে নেওয়া চাই।