১২
ইংরেজ রাজত্ব কায়েম হওয়ার সূচনাপর্বে জীবিত ছিলেন বিপিনচন্দ্রের পিতামহ ভবানীপ্রসাদ। কমলচরণ ছাড়াও তাঁদের অপরাপর ভ্রাতাদের মধ্যে ছিলেন রামকৃষ্ণ, শান্তরাম এবং শান্তরামের দুই পুত্র রত্নাকর ও জয়কৃষ্ণ। আপাতত বিপিনচন্দ্রের আশাভরসার স্থল হলেন জীবনকৃষ্ণ, জগমোহন, রাজচন্দ্র এবং জগবন্ধু। সম্পর্কে খুল্লতাত হলেও জগমোহনের সঙ্গে তাঁর খুব হৃদ্যতা। এ খুড়াদের মধ্যে শেষের জনের সঙ্গে আবার সাহেব সুবার চলাফেরা। বাড়িঘর মেরামতি, সংস্কার, নতুন ঘর নির্মাণ করতে এই সাহেবরাই যুগিয়েছেন মূল্যবান নাগেশ্বরের কাঠ, বিলাতি টিন, লোহার এঙ্গল। ইতিমধ্যে রামপুর হরিণছড়া ডলু সুভং মাড়ুয়াছড়া বিক্রমপুর বালাছড়া টিলায় জঙ্গল সাফ করে চায়ের চারাও রোপণ করা হয়েছে। এ মহাযজ্ঞে গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের সমর্থন চাই।
কাজ চালানো ইংরেজিও রপ্ত হয়েছে জগবন্ধুবাবুর। জ্যেষ্ঠভ্রাতা জগমোহনবাবুর চোখের চিকিৎসা করতে আসা সাহেব ডাক্তারকে রোগীর সমস্যা বোঝাতে তিনি বলেছিলেন he sees - Sir but not sees। সাহেব যা বোঝার বুঝে নিলেন। অবশ্য চোখের ক্যাটারেক্ট অপারেশন করার পর প্রকৃতই দেখা গেল রোগী চোখ মেলছেন but not sees, অর্থাৎ তিনি সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তিই হারিয়ে ফেললেন। কে জানে এটা ইংলিশ ভাষার ভুল না সার্জিক্যল ডিজেস্টার। এ থেকেও বুঝি জগমোহনের ইংলিশদের প্রতি বীতরাগ। নিজের পুত্র যখন ইংরেজ বিতাড়ন যজ্ঞে জড়িত হয়ে গেল তিনি আর বাধা দিতে পারলেন না। ইংরেজ ঘেঁষা ভ্রাতার পুত্র শশীকে ডিব্রুগড় ব্যারিহোয়াইট মেডিক্যাল স্কুলে ডাক্তারি পড়াতে পাঠিয়ে হাইলাকান্দির ভাগ্নে মারফত তাঁরও সাহেবিয়ানার প্রতি আসক্তির কথা জেনে নিরতিশয় ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন। অবশ্য ভ্রাতুষ্পুত্র আরও এক কাঠি সেয়ানা। সাহেবি পোশাক পরিচ্ছদ গ্রহণ করলেও তিনি যে ভিতরে ভিতরে