মধ্যে উন্মাদনার লক্ষণও স্পষ্ট হচ্ছে। তবে কি পরিবারের উপর কোনও বিপর্যয় ঘনিয়ে আসছে?
কলিকাতায় পৌঁছে গায়ে গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়া লাগতেই রায়বাহাদুরের অবসন্ন দেহটা কেমন সতেজ হয়ে উঠল। ভাড়া করা বাড়িতে সব সুবিধাই হয়ে গেল। বাড়ি থেকেই স্থির করে এসেছেন দেবী কালীমাতাকে দর্শন না করে কোনও কাজ শুরু করবেন না। বাড়ির ছোট বড় সবাই’ই এ কথাটি বার বার মনে রাখতে বলেছেন। স্নান সেরে অনুচর সহ চললেন কালীঘাটের উদ্দেশ্যে।
হাইকোর্টের কৌসুলী তারাকিশোরবাবু তাঁর বিশেষ মক্কেল রায়বাহাদুরকে আসতে বললেন উত্তর কলিকাতার বাড়িতেই। দেশের মানুষের সঙ্গে কোর্ট নয় বাড়িতেই কথাবার্তা বলেন তিনি। তাছাড়া বন্ধুবর কামিনীকুমার গ্রাম কাছাড়ের এ বিশিষ্ট ব্যক্তির সবিশেষ পরিচয় দিয়ে একখানা নাতিদীর্ঘ পত্রও লিখেছেন ইতিমধ্যে । স্কুল ছাড়ার পর থেকেই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যাওয়ায়, সম্প্রতি পিতৃদেবের ক্রোধ প্রশমিত হওয়া সত্ত্বেও দেশবাড়ির খবরাখবর নেওয়া আর হয়ে উঠছে না। ছাত্রজীবনের প্রথম পর্বে কলিকাতায় ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে চলাফেরা শুরু করার খবর সিলেটে পৌঁছালে তাঁর পিতা প্রচণ্ড ক্রোধবশত পুত্রকে নাকি মা কালীর পায়ে বলি দিতে উদ্যত হয়েছিলেন, এরকম একটি কথা তখন লোকমুখে প্রচারিত ছিল। বিপিনবাবু অবশ্য অতশত ব্যাপার জানতেন না। তবে দেশের মানুষ পেয়ে তারাকিশোরবাবু নিতান্তই উচ্ছ্বসিত। একটু আবেগতাড়িত হয়ে তিনি অনেক ব্যক্তিগত প্রসঙ্গও উত্থাপন করে কিছুক্ষণ কথাবার্তা চালিয়ে গেলেন।
চা-পর্ব শেষ করেই তিনি দপ্তর মেললেন। ইতিপূর্বে প্রেরিত সমস্ত নথি, চিঠি, নিমাতাবাড়ি সংক্রান্ত কাহিনির বয়ান, যা রায়বাহাদুর ডাকযোগে পাঠিয়েছিলেন সবই নিখুঁতভাবে ফাইলবন্দি করে রাখা আছে। এখান থেকে একটা একটা করে টেনে বের করে চোখ বুলাতে বুলাতে তিনি দু’একটা