—আপনি রাজকীয় সনন্দটি কি খতিয়ে দেখেছেন? দেখুন ‘চান্দ লস্করের বেটা মণিরাম’।— বাদী পক্ষ একটা কাল্পনিক সত্তাকেই যখন খাড়া করেছে মণিরামের প্রতিপক্ষ হিসেবে, তখন চান্দ খাঁ ই বা কেন? বুদ্ধিমান মানুষও মোক্ষম সময়ে একটা ফাঁক রেখে দেয়। আমরা জানি সিলেটে খাঁ উপাধি থাকলেও গ্রাম কাছাড়ে, তাও আবার পাটনি, নমশূদ্র সমাজে এ উপাধি নৈবঃ নৈবঃচঃ। আর এ সনন্দে স্পষ্টভাবে বড়ভুইঞা, মজুমদার উপাধিধারী মিরাশদারের উল্লেখ রয়েছে। এ এলাকায় এর বাইরে আর কোনও মিরাশদার জমিদারের অস্তিত্ব থাকার কথাই নেই। চান্দ খাঁর পিতৃপরিচয়ও অস্পষ্ট, লেখা হয়েছে ‘সাকিন কাছাড়’, এটা তো আরও অস্পষ্ট।
একেবারে শিশুর সারল্যে তারাকিশোরবাবু বলে উঠলেন,
—বিপিনবাবু, আপনি বাড়ি যেতে পারেন। যথা সময়ে মামলার রায় আপনার হাতে পৌঁছে যাবে।
এ মামলাকে কেন্দ্র করে রায়বাহাদুর বিপিনবাবুর অভিজ্ঞতার দিগন্ত নানা দিকে বিস্তার লাভ করল। তিনি ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, লিপি, ভাষা ইত্যাদি বিষয়েও অনেক ব্যুৎপত্তি লাভও করলেন, অন্য অবস্থায় যা হবার কোন সম্ভাবনাই ছিল না। এখানেই মা নিমাতার আশীর্বাদ। জ্ঞানচক্ষু উন্মিলনী সর্বমঙ্গলকারিনী এ দেবীকে শত কোটি প্রণাম। নিজ নিজ স্বাভাবিক প্রবণতা অনুযায়ী ভক্তেরা তাঁকে নিমাতা, নির্মাতা বা নৃমাতা যে নামেই ডাকেন না কেন তিনি কাউকেই বিমুখ করেন না।
১৪
দীর্ঘদিন মামলা মোকদ্দমা, আর আনুষঙ্গিক পুরাতত্ত্ব, প্রত্নলিপি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার ফলে জমিদারির দিকে এবং মৌজার দিকে নজর দেওয়া হয়ে ওঠেনি বিপিনচন্দ্রের। এ সুযোগে অতি বিশ্বাসী আর সুযোগসন্ধানী সেরেস্তার কর্মীদের আতিশয্য এবং অপকর্ম যে তাঁর নজরে আসেনি তা