নয়, কিন্তু পরিস্থিতির চাপে এ সব উপেক্ষা করে গেছিলেন। ক্ষেত কৃষির যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। উৎপাদন কমার ফলে খাজনা আদায় প্রায় হয়ইনি। প্রজাদের হাতে উদ্বৃত্ত ফসল না থাকলে খাজনা দেবেই বা কী করে? ফসলের গুণগত মানও কমে গেছে। আর আউশ ধান করলে শাইল উরা তৈরি করতে করতে বছর চলে যায়। কৃষকেরা গোবর সার ছাড়া আর কোনও সার প্রয়োগের কথা ভাবতে পারে না। পচন এবং খৈলের প্রয়োগে উৎসাহিত করার কথা বলে গেলেও কেউ বিশেষ গা করেনি। পূর্বপুরুষের আমলের কালিজিরা, কালি মেউকরি, কাছালো, ধলা আছরা, ঠাকুর ভোগ, সোনা আছরা, সোনামুখি, হরিনারায়ণ, ভেড়া পাওয়া, নানা জাতের বিরইন এগুলো আলাদা আলাদা করে সংরক্ষণ না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি হাতে গুণে দেখলেন পঞ্চাশ ষাটটি নাম তো এখনই বলতে পারবেন। কতদিন ভেবেছেন অ্যাগ্রিকালচার ইন্সপেক্টেরের সঙ্গে কথা বলে নতুন কিছু একটা করবেন। সাহেবের উৎসাহও খুব। লক্ষীপুরের মণিপুরি কৃষকদেরও উৎসাহ আছে এদিকে খুব। তবে এবার যে একটু প্রজা, ক্ষেত জমিজমার দিকে নজর দেবেন তার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় বিপিনচন্দ্রকে নিতে হল লোক্যাল বোর্ডের সদস্য পদ। সাহেবসুবার প্রতি খুব একটা মুগ্ধবোধ না থাকলেও এদের সঙ্গে চলাফেরা বেড়ে গেছে। ভূমি রাজস্ব আধিকারিক, দেশীয় সেলম্যাণ্ট অফিসার, ফৌজদারি দেওয়ানি কোর্টের হাকিম, মুনসেফ এমনকি ডেপুটি কমিশনারের দপ্তরে তাঁর পরামর্শ অপরিহার্য হয়ে উঠল। তিনি চোখের সামনে একটা পরিবর্তন লক্ষ করতে থাকলেন। প্রাচীন দিনের খোলস ছেড়ে একটা নতুন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠছে, এবং সংস্কারমূলক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে নিজের জড়িত হয়ে যাওয়াটা প্রত্যক্ষ করে এক ধরনের পুলক অনুভব করলেন।
এরই মধ্যে কমিশনারের পরামর্শে যেতে হল ভুবন পাহাড়ে গুহামন্দির পরিদর্শনে। তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে কিছু সংস্কারমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ