পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

অর্থের কী সদ্‌ব্যবহার করা যায় এ জন্যেই এ অভিযান। মতিনগর গঙ্গানগর গাছের শিকড় বাকড় আঁকড়ে ধরে ঝোপ ঝাড় কাঁটা বন পেরিয়ে পেরিয়ে পাথুরে রাস্তায় প্রাণ হাতে করে গুহামন্দিরের সামনে পৌঁছোলে যাত্রীদের একমাত্র ভরসা যে একটা অগভীর জলাশয়, এর জলও অপেয়। ভক্তরা তা’ই আজলা ভরে পান করে তৃষ্ণা নিবারণ করেন এবং দেবাদিদেব মহেশ্বরের মাথায় বেলপাতা সহ ঢেলে দিয়ে নেমে আসেন। পুকুরটাকে সারানোর কাজে শ্রমিক লাগিয়ে শিবচতুর্দশীতে তীর্থযাত্রীরা যাতে একটা নির্দিষ্ট পথের দিশা পান এ কাজ শুরু করলেন। ভেঙে যাওয়া মেলমণ্ডপটির মেরামতের কাজও নিজের হাতে নিলেন। ভুবনের বিস্তারিত কথা নাকি বর্ণিত হয়েছে সাব ইন্সপেক্টর সাহেবের ইতিহাস গ্রন্থে। সদরে এসে দেখা করতে হবে লেখক উপেন গুহ মহোদয়ের সঙ্গে, যদি এ তীর্থ সম্বন্ধে কোনও বিশেষ তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

 ভুবনতীর্থের অনেক রহস্যই অজানা থাকত যদি উপেন্দ্রচন্দ্র গুহ মহোদয়ের সঙ্গে বিপিনচন্দ্রের সাক্ষাৎ না হত। তিনি জানালেন এ গুহামন্দির নাকি হাজার বছরেরও প্রাচীন। এখানকার দশ বারোটি সুড়ঙ্গ যে কোন দিকে গিয়ে মিলেছে কেউ বলতে পারে না। সাধু সন্ন্যাসীরা নাকি এখানে বছরের পর বছর সাধনা করে কাটান। শোনা যায় মহাবিদ্রোহের সময় সিপাহিরা নাকি এ গুহাগুলোতে আস্তানা গেড়েছিলেন। তিনি আরও জানালেন এখানে কিছু কিছু কুকি জনজাতীয়দের অঙ্কিত গুহাচিত্রও রয়েছে। কয়েকটি পাথরের ভগ্নমূর্তিও ওখানে রয়েছে যেগুলো সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণেরও প্রয়োজন, এ কথাটিও তিনি রায়বাহাদুরকে মনে করিয়ে দিলেন। তিনি আরও জানালেন কাছাড়ের মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আমলেই নাকি এ লুপ্ততীর্থের সন্ধান মেলে।

 —এ কাহিনির কিছুটা আপনি মৎপ্রণীত ‘কাছাড়ের ইতিবৃত্ত’গ্রন্থখানিতে দেখতে পারেন।