১৫
বাড়িতে এসেই পেলেন খামবন্ধ একটি পত্র। মহামহোপাধ্যায় বিদ্যাবিনোদের টানা ইংরেজিতে লেখা বারনামা সহজেই সনাক্ত করে ভীষণ পুলকিত বোধ করলেন বিপিনবাবু। তবে এক্ষুনি না, দুপুরের স্নান আহারাদি শেষ করে চিঠি নিয়ে বসা যাবে। বিশিষ্ট এ পণ্ডিতপ্রবরের পত্র পাঠ যেন তাঁর কাছে একটি ধর্মগ্রন্থ পাঠই। নায়েবমশাইয়ের হাতে চিঠিখানা দিয়ে তিনি ভিতর বাড়িতে ঢুকলেন।
দুপুর গড়িয়ে গেলে রায়বাহাদুর অফিসঘরে নিজস্ব চেয়ারটিতে বসলেন। টেবিলের উপর নিপুণ হাতে কাগজের লেফাফা কেটে নায়েবমশাই ক্লিপ দিয়ে সেঁটে কাঠের পাঠদানির উপর বসিয়ে রেখেছেন। অনুমতি ছাড়া অবশ্য ভেতরের অক্ষরে চোখ বুলাবেন না ভুল করেও। পদ্মনাথবাবু বিনয় সম্ভাষণ, কুশলমঙ্গলাদির পর পাঁচ বছর পূর্বে তাঁর আতিথ্য দানের স্মৃতিচারণ, প্রকাশিত দণ্ডবিধি গ্রন্থ সম্বন্ধে ‘কামরূপ অনুসন্ধান সমিতি’র মতামত ইত্যাদি কথার পর এলেন মূল বার্তায়। আগামী ১৩ই পৌষ, ১৩২১ শিলচরে আয়োজিত হতে চলেছে ‘সুরমা সাহিত্য সম্মিলনী’র দ্বিতীয় অধিবেশন। এতে অধিবেশন সভাপতি হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকবেন। তা ছাড়াও করিমগঞ্জ মৌলবিবাজার হবিগঞ্জ আর সিলেট সদর থেকেও বিশিষ্টজনেরা এতে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি আশা করছেন এ শুভ অনুষ্ঠানে তাঁর প্রিয়জন বিপিনবাবুর ঘনিষ্ট সান্নিধ্য লাভে ধন্য হবেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
হাতে আর এক মাসও নেই। যে নথিগুলোর সাহায্যে নিমাতা বাড়ি সংক্রান্ত মামলায় তাঁর বিজয় হয়েছে এ নথিগুলোর পাঠোদ্ধার এবং এগুলোকে মুদ্রিত আকারে প্রকাশ করে যে-ব্যক্তি তাঁর চির কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছেন তিনি আসছেন। যে-ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে বিপিনচন্দ্র নিজ দেশ, নিজ গ্রাম, পরিবার, পূর্বপুরুষ সম্বন্ধে দেখার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করেছেন, সেই ব্যক্তিকে সামনে পেয়ে শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের এ সুযোগ। কথাটি