পুরো অধিবেশনের দুটো দিন সামনে দাঁড়িয়ে সমস্ত কাজ কুলিয়েও দিলেন। শেষের দিন মিউনিসিপ্যালিটি পাঠশালা ঘরে একটি প্রীতি সম্মিলন আয়োজন করে অতিথিদের ভোজনে পরিতৃপ্ত করিয়ে নিজেও তৃপ্ত হলেন।
এত বড় একটা সম্মিলন। না, কোনও রাজনীতি নয়, না কোনও আন্দোলন, না কোনও সংঘর্ষ। শুধু সাহিত্য। এ নিয়ে এত জন মানুষ দু-দুটো দিন উৎসব মুখর। কাছাড়ে এটা যে অভাবনীয়। কবি সাহিত্যিক মনীষীদের পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য সেই হেড়ম্ব রাজসভার প্রদীপ তো প্রায় আশি বছর আগেই নির্বাপিত। কোন মায়ামন্ত্র বলে আজ সেই দিন ফিরে এল এ ঔপনিবেশিক শহরের বুকে। সংগীত, অভিভাষণ, প্রস্তাবাদি গ্রহণ, প্রবন্ধ, কবিতা পাঠ এমনকি নাট্যাভিনয় নিয়ে এ মহোৎসব। সভাপতি চন্দমশাইয়ের প্রয়াসে বড়দিনের বিশেষ কন্সেশন হিসেবে সম্মেলনে যোগদানেচ্ছু প্রতিনিধি এবং অতিথিদের এক-ভাড়ায় ‘আসাম বেঙ্গল রেলে’ যে-কোন স্টেশন থেকে শিলচর আসা-যাওয়ারও ব্যবস্থা হল। বায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্রের আহ্বানে বন্ধুবর নন্দলাল বর্মন, মণিচরণ বর্মন এবং হেড়ম্ব রাজবংশজ শ্রীযুক্ত মোহনসিং বর্মন মহাশয় উপস্থিত থেকে বিশেষ উৎসাহ নিয়ে প্রস্তাবাদি গ্রহণে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করলেন এবং সাহিত্য বিষয়ক বিশেষ অধিবেশনে সুচিন্তিত প্রবন্ধ পাঠও করলেন। ইতিহাসে উপেক্ষিত হৈড়ম্বীয় জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা সুলিখিত এবং সুপঠিত নিবন্ধটি শুনে বিদ্বজ্জন তো চমকিত। সিলেট গৌহাটি থেকে আগত সাহিত্যরথীদের সামনে পাণ্ডববর্জিত এই কাছাড় জেলার ঐতিহ্যের কিছু প্রদর্শিত নিদর্শনসমূহ বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হওয়াতে বিপিনচন্দ্রের বুক গর্বে স্ফীত হয়ে উঠল।
এরই মধ্যে পণ্ডিত ভুবনমোহন বিদ্যার্ণব মহোদয়ের প্রবন্ধ নিয়ে কিছু গুঞ্জন ধ্বনিত হল। বিপিনচন্দ্র এ তত্ত্বের সঙ্গে সহমত হতে পারলেন না,