পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
৬৫

‘কাছাড়ই পুরাতন ত্রিপুরা রাজ্য’। অন্যান্যরাও অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করলেন যে, ত্রিপুরার সঙ্গে প্রাচীন কাছাড়ের সম্পর্ক ছিল এতে দ্বিমত নেই, কিন্তু কাছাড় যে নিজস্বতায় ভাস্বর ছিল, তাও তো ঠিক। তবে যিনি প্রবন্ধটির লেখক তিনি তো ওই সময়ে আয়োজক হিসেবে অন্য কাজে ব্যস্ত। জানতেই পারেননি তাঁর এ বক্তব্য যে আসর গরম করে দিয়েছে। তাঁর অবর্তমানে জগন্নাথ দেব মহাশয় এ বিষয়ে কোনও অভিমত দেওয়া থেকে বিরত রইলেন।

 অপর গবেষক ক্ষীরোদবিহারী চক্রবর্তীর নিবন্ধ, ‘নারদীয় রসামৃতের আভাস’ শুনতে শুনতে বিপিনচন্দ্র চলে গেলেন সুদূর অতীতে। পিতৃপুরুষের মুখে শোনা মহারানি চন্দ্রপ্রভা এবং তৎপুত্র সুরদর্প নারায়ণের কাহিনিতে। জীবনের এক দুর্যোগপূর্ণ পর্বে মহারাজ তাম্রধ্বজনারায়ণ এবং মহিষী চন্দ্রপ্রভা যে তাঁরই অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহ চান্দ লস্করের সাহচর্য পেয়েছিলেন, এই সকল কথায়। ওই মহীয়সী নারীর অনুপ্রেরণায় যে কবি ভুবনেশ্বর বাচস্পতি রচনা করেছিলেন ‘শ্রী নারদি রসামৃত’, এ কাহিনি তাঁর আশৈশবের স্মৃতিসঙ্গী। কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে আজ এ রসামৃত কাব্য আলোচনার শ্রোতা তিনি স্বয়ং। তাঁর চক্ষু আর্দ্র হয়ে গেল, কৃতজ্ঞতায় মন ভরে উঠল উকিল কামিনীকুমার চন্দ মহাশয়ের প্রতি, এমন একটা মহান কর্মকাণ্ডে তাঁকে সামিল করার জন্য। প্রচণ্ড আবেগতাড়িত হয়ে রায়বাহাদুর সভাকক্ষের বাইরে এসে খোলা জায়গায় দাঁড়ালেন। পৌষ সন্ধ্যার রক্তিম আভা সম্মেলন চত্বরে এক মায়াবী আবেশ ছড়িয়ে দিল। নির্বাক হয়ে পশমের শালটি কাঁধ থেকে নামিয়ে গায়ে জড়িয়ে নিলেন। অনেক দিন এমন উষ্ণ আমেজ তিনি অনুভব করেননি।