পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
৬৯

শ্রদ্ধা জ্ঞাপনার্থ এক মিনিট নীরবতা পালন করার জন্য সবাই দণ্ডায়মান হলেন।


১৭

অধিবেশন সভাপতির ভাষণ দিতে উঠে পদ্মনাথ ভট্টাচার্য বিদ্যাবিনোদ দুই হাত জোড় করে সংস্কৃত মঙ্গলাচরণ করে সর্ববিঘ্ন বিনাশকারী গণপতির কাছে প্রার্থনা জানালেন যে, তিনি যেন কাছাড় জেলার পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত ভুবন পর্বত শিখরে উপস্থিত হয়ে আজকের এই আয়োজনকে সার্থক করে তুলুন। এ প্রারম্ভিক কথাটির প্রতিটি শব্দ রায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্রকে উন্মনা করে তুলল। তিনি যে অতি সম্প্রতি ওই ভুবন তীর্থ দর্শন করে কয়েকটি ভগ্নপ্রায় মূর্তি প্রত্যক্ষ করে এসেছেন, মন্দির সংস্কারের কাজও শুরু করে এসেছেন। এরপর পদ্মনাথ জেলার পশ্চিমপ্রান্তে সিদ্ধেশ্বর কপিলাশ্রম, হেড়ম্বরাজ আরাধিতা খঙ্গরূপা দেবী রণচণ্ডী, খাসপুর রাজধানীর প্রাসাদ সংলগ্ন ইষ্টক নির্মিত দেবীমন্দিরের বন্দনা করলেন। একসঙ্গে এতগুলো প্রসঙ্গের ভার বিপিনচন্দ্রের পক্ষে বহন করা দুঃসহ। তিনি চক্ষু বন্ধ করে মাথা নত করে বসে রইলেন। বাকি কথাগুলো কর্ণকুহরে গেলেও তিনি যেন কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না।

 সম্বিত ফিরে এল হঠাৎ যখন কানে এল মণিচরণ বর্মন প্রণীত ‘হৈড়িম্ব ভাষাপ্রবেশ’ গ্রন্থখানির নাম। এরপর নানাবিধ প্রসঙ্গ এল, এল কলের গান প্রসঙ্গ যা আমাদের সংগীতের বুনিয়াদ নষ্ট করছে বলে পদ্মনাথ ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন। রায়বাহাদুর এ কথা শুনে কুণ্ঠিত হয়ে উঠলেন। কলিকাতা, শিলং, গৌহাটি বা সিলেট ভ্রমণ কালে অনেক সৌখিন জিনিসের সঙ্গে এই গ্রামোফোন যন্ত্রটিও যে তিনি কিনে এনেছেন, চালিয়ে গানও শোনেন মাঝে মাঝে। ঘরে সাজিয়েও রেখেছেন যন্ত্রটি।