পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
৭৩

১৯

মহাযুদ্ধ শেষ হতে না হতে দেশে একজন ব্যক্তির নাম শোনা যেতে লাগল। দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত এক তরুণ ব্যারিস্টার, নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি। ইতিমধ্যে ব্যারিস্টারের পোশাক ছেড়ে, সমস্ত সাহেবিয়ানা পরিত্যাগ করে এক টুকরো মাত্র কটিবস্ত্র পরে সারা ভারতবর্ষের আনাচে কানাচে পরিভ্রমণ সেরে এখন দেশে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সরকারি খেতাব প্রাপ্ত, বনরাজ-সোনাপুর আর লক্ষীপুরের মৌজাদার, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্র এখন ধর্মসংকটে। সাহিত্য সম্মেলন উপলক্ষে যাঁর সঙ্গে সম্প্রতি এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়ে উঠেছিল সেই কামিনীকুমার চন্দমশাই এখন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি হিসেবে কাছাড়, সিলেট, শিলং, গৌহাটি, কলিকাতার এখানে ওখানে ব্রিটিশ বিরোধী সভা সমিতি করে বেড়াচ্ছেন। সাহিত্য সম্মেলনে এসে কমিশনার সাহেব মহাযুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণ এবং রাজপরিবার সদস্যের প্রয়াণে শোক প্রস্তাবের পর্বটি প্রত্যক্ষ করায় প্রশাসকরা তাঁদের উপর যারপরনাই তৃপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন এদের মনোভাব তো আগের জায়গায় থাকার কথা নয়। আর কামিনীবাবু? এ ব্যক্তিটিকে নিয়ে সাহেবদেরও সমস্যা। মিউনিসিপ্যালিটি থেকে সরাসরি সরানো গেল না, এখন চেয়ারম্যানের পদটিও তাঁকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। কিন্তু তবুও রায়বাহাদুরের মনে হচ্ছে এ তো জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ। অবশ্য কামিনীবাবু আজ নয়, সেই বঙ্গভঙ্গের আগ থেকেই কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করে আসছেন। বছর দশেক আগেই তিনি চিফ কমিশনার ফুলার সাহেবকে সিলেট-কাছাড় আর ঢাকা-চট্টগ্রাম-ময়মনসিং-আসাম নিয়ে প্রস্তাবিত নতুন প্রদেশের বিরোধিতা করে একখানা পত্র দিয়েছেন, এর একটি নকল তাঁর হাতেও এসে পৌঁছেছে। সাহসও আছে লোকটির। ১৮৭৪ সালে সিলেট-কাছাড়ের আসাম ভুক্তির সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করে তিনি বলছেন, এ দুটো জেলার