পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

মানুষ এর ঘোরতর বিরোধী। ১৯০৪ সালের ৩১ মার্চে লেখা ওই পত্র নিয়ে সারা আসামে নতুন করে চর্চা হচ্ছে, বিশেষ করে একটি কথা নিয়ে জোর আলোচনা, “Assam - as it is at present constituted contains communities of very conflicting interests"। বঙ্গভঙ্গ রদ হবার পরও কামিনীবাবুর কথার খেই ধরে আলোচনার বিরাম নেই। নবপ্রতিষ্ঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের প্রশাসনিক-প্রধান প্রসঙ্গে তিনি আগেই বলে রেখেছিলেন, “I am of opinion that the proposed Lietenant Governorship is also objectionable.” বিপিনচন্দ্র বুঝতে পারছেন, কাদের সঙ্গে তিনি চলাফেরা করছেন। ওদিকে বিদ্যাবিনোদও এডোয়ার্ড গেইট সাহেবের ইতিহাসকে সমালোচনা করে একখানি বই প্রকাশ করেছেন, এ নিয়েও তীব্র কানাকানি। আর এদিকে অনুজভ্রাতা যতীন্দ্রকে নিয়ে তো দুশ্চিন্তার অবধি নেই। বাপের জ্যেষ্ঠপুত্র হিসেবে মাধ্যমিক পড়াকালীন অবস্থায়ই তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু স্বদেশিদের সঙ্গে চলাফেরায় কোন বিরাম নেই। এই তো কিছুদিন আগে বরিশাল থেকে আসা এক চারণকবি তাঁর মাথা খারাপ করে দিয়ে গেছেন। যতি নাকি বাড়িঘর ছেড়ে তাঁর পিছনে পিছনে ঘুরেছে। ভ্রাতা এখন বয়ঃপ্রাপ্ত। আমি কী করতে পারি? সেদিন বিদেশি বর্জন আর বহ্নিউৎসবে সে নাকি নেতৃত্ব দিয়েছে। উচ্চকণ্ঠে গান গেয়ে মায়েদের, মেয়েদের আহ্বান করেছে রেশমি চুড়ি আর বিলেতি কাপড় পরিত্যাগ করতে। বিপিনচন্দ্র এসব দেখেও না-দেখার ভান করেছেন, তাঁর বাড়ির মেয়েরাও চাকরের হাত দিয়ে জাপানি টেবিল ক্লথ, চিনা পর্দা, রেশমি বস্ত্র আর বিলেতি মিলের শাড়ি পাঠিয়েছে আগুনে দিতে। সঙ্গে জুটেছে তারাচরণ, ওয়াজেদ আলি, দেশমুখ্য আর চক্রবর্তী বাড়ির ছেলেরা, খবর পেয়ে এসেছে বড়যাত্রাপুর, অরুণাচল-মাসিমপুর, সোনাপুর, বিহাড়া, বিক্রমপুরের স্বেচ্ছাসেবকের দল। ভেতর থেকে উস্কানি দিচ্ছে ভগ্নী ব্রহ্মময়ী। বিয়ের পর স্বামীর ঘর