পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

নির্বাসিতা তুমি
সুন্দরী শ্রীভূমি।

 যারা আশায় ছিলেন দুই বাংলা আবার জোড়া লাগবে, আর যারা আশা করেছিলেন আসামকেও তার স্বভূমিতে স্বনামে ফিরিয়ে আনা হবে, এদের উভয়েরই স্বপ্ন অধরা থেকে গেল।

 এই হতাশা, বেদনা আর গ্লানির পীড়ন অস্বীকার করে এরই মধ্যে কতিপয় জ্ঞানতাপস নতুন উদ্যমে জেগে উঠতে চাইলেন, সন্ধানে ব্রতী হলেন খণ্ডিত ভূখণ্ডের প্রত্নতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব, ইতিহাস, যেতে চাইলেন ঐতিহ্যের উৎসে। মহানগরীর নিরাপত্তা ও সুখস্বাচ্ছন্দ্য পরিত্যাগ করে নির্বাসিতা বাংলার প্রান্তিক ভূমিতে এলেন মহামহোপাধ্যায় পদ্মনাথ বিদ্যাবিনোদ।

*** *** *** ***

 বঙ্গভঙ্গের চারটি বৎসর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এক দ্বিপ্রহরে পদ্মনাথ বিদ্যাবিনোদ আলোচনায় বসেছেন জাটিঙ্গা নদীর তীরে প্রাচীন গ্রামটির জমিদার রায়বাহাদুর বিপিনচন্দ্রের সঙ্গে। যে-সময়ের কথা বলা হচ্ছে তখন অবশ্য প্রথমোক্ত জনের নামের সঙ্গে ‘মহামহোপাধ্যায়’ আর দ্বিতীয়জনের নামের সঙ্গে ‘রায়বাহাদুর' অভিধা লাগেনি। সম্মানিত অতিথি পদ্মনাথ বিদ্যাবিনোদ শ্রীহট্ট-কাছাড়, কামরূপ-শোনিতপুর এবং ত্রিপুরা-মাইবঙের অন্দরে কন্দরে অবিরাম পরিভ্রমণ করে চলেছেন। ছিলেন শিক্ষা আধিকারিক, সরকারি আমলা। সম্প্রতি আসামের ভূতপূর্ব চিফ কমিশনার স্যার হেনরি কটন সাহেবের ইচ্ছানুসারে তাঁরই নামাঙ্কিত ‘কটন কলেজে’ গিয়ে স্থিত হয়েছেন। এ হেন ব্যক্তিকে কাছে পেয়ে মাতৃভূমির গৌরবে গৌরবান্বিত বিপিনচন্দ্র মনের ভিতর চাপা ক্ষোভ ব্যক্ত করতে দ্বিধা করলেন না,

 —লোকে বলে আমাদের স্থানটি পাণ্ডব বর্জিত এলাকা। কথাটা কি সত্যিই তাই? দ্বাদশবর্ষ বনবাস কালে দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমসেনের সঙ্গে