জন্য পদ্মনাথবাবু তো আর বসে নেই। পরিকল্পনাটিকে বাস্তবায়িত করতে হলে প্রয়োজন যতিকে। নতুন কিছুতেই তাঁর উৎসাহ বেশি। এই বিবেচনায় একটি বিকল্প চাষ পরিকল্পনার খসড়া উপস্থাপন করলেন ভ্রাতার কাছে। চিঠিতে স্পষ্ট করে লিখলেন,
—“আমাদের রায়ত বা পাইকাস্তের হাতে টাকা না থাকলে আমরা কিছুতেই খাজনা আদায় করিতে পারিব না। সুতরাং ইহারা যাহাতে টাকা পায় তাহা চিন্তা করাও আমাদের কর্তব্য। তুমি এখন বাড়ীতে আছ সুতরাং আমার উপদেশ মত মনোযোগের সহিত কার্য করিলে আমাদের রায়তদের এবং গ্রামবাসীর বিশেষ উপকার করিতে পারিব বলিয়া মনে করি।”
কথাটি অবশ্য যতীন্দ্রর মনঃপুতই হল। আসলে তাঁর এ অগ্রজ যতই সাহেব ঘেঁষা হন না কেন, তাঁর বুকের ভেতরও রয়েছে এক গভীর স্বদেশানুরাগ। আর বৃহত্তর পরিবারের প্রত্যেকের দিকেও তাঁর নজর। খুড়া জেঠা, জেঠি খুড়িমা, ভগ্নি ভগ্নিপতিদের নিয়ে বিশাল পরিবারের যে-কোন প্রয়োজনে তিনি এগিয়ে আসতে সদাই প্রস্তুত। এতে পেছন থেকে কেউ কিছু বলার নেই। স্ত্রী প্রমীলাসুন্দরী অবশ্য কোনদিনই এসব কাজে বাঁধা দেন না।
ইতিমধ্যে যতীন্দ্রমোহন লোক্যাল বোর্ডের সেক্রেটারি হয়ে গেছেন। এবার যদি একটু সংসারের দিকে মন ফেরে এ আশা অবশ্য বিপিনবাবুর রয়েছে, যদিও তিনি মনকে বুঝিয়েছেন কনিষ্ঠ ভ্রাতা তাঁর নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছে, এখন তাঁর পথ আগলে রাখা ঠিক হবে না।
২২
তারিখটি ছিল উনিশ শো একুশের ২৪ এপ্রিল। রাজা গোবিন্দচন্দ্র ইশকুলের সামনে খোলা মাঠে আয়োজিত হল অসহযোগ এবং খিলাফত আন্দোলনের