পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

যৌথ সভা। কংগ্রেস সভাপতি কামিনীকুমার চন্দ এবং প্রাদেশিক খিলাফত কমিটির শিলচর মহকুমা শাখার সভাপতি, কনকপুরের বসারত আলি মজুমদার, সম্পাদক মৌলবি তবারক আলি, উধারবন্দ, এবং সহ-সম্পাদক রাশিদ আলি আর অন্যান্য সাঙ্গপাঙ্গদের উপস্থিতিতে এ সভায় যোগদান করলেন বাবু যতীন্দ্রমোহন, তারাচরণ চক্রবর্তী এবং মুন্সি ওয়াজেদ আলি। সভা থেকে সরাসরি স্কুলের ছাত্রদের ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামবার আহ্বান জানানো হলে তৎক্ষণাৎ ১২ জন ছাত্র বই খাতা নিয়ে বেরিয়ে এল। এরা জানতে পারল না ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে সেদিন থেকেই তাঁদের গ্রামটির ভবিষ্যৎ জুড়ে গেল, এরাও হয়ে গেল এক মহান ইতিহাসের সাক্ষী এবং কুশীলবও।

 সরকারি নির্দেশ এল জেলা সদর থেকে যে, গ্রামের তিনজন ব্যক্তি, যাঁরা আবার স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যও বটে, এদের সদস্যপদ খারিজ করা হোক। পরদিন থেকে স্কুলের ছাত্র সংখ্যা কমতে থাকল। গ্রামে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে উঠল। ‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠল নির্জন জনপদটি।

 মহাত্মা গান্ধি পরিচালিত অসহযোগ এবং খিলাফত আন্দোলন ইতিমধ্যেই সিলেটে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উত্তর ভারতে দেওবন্দি আলেম এবং দেওবন্দ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘কওমি মাদ্রাসা’র আলেমদের প্রভাবে আন্দোলনের ঢেউ কাছাড়-করিমগঞ্জেও এসে লেগেছে। বিশ্বযুদ্ধের অবসানে ভারতীয় মুসলমানের সঙ্গে ব্রিটিশরাজের ওয়াদা ভঙ্গের ফলে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের মুসলমানরাও বুঝতে পেরেছে ভারতের হিন্দু-মুসলিম সেনারা যুদ্ধে প্রাণ দিল, কিন্তু এ যুদ্ধ মুসলমানদের শক্তির প্রতীক তুরস্ক-খিলাফতের বিলুপ্তি ঘটিয়ে দিল, ঘটিয়ে দিল অটোমান সাম্রাজ্যেরও পতন। করিমগঞ্জে সুরমাভ্যালি রাষ্ট্রীয় সম্মিলনীর চতুর্থ অধিবেশনে খিলাফত ও অসহযোগ