নেবে? ইতিমধ্যে পুত্র কর্তৃক সরকার বিরোধিতা, জনমত গঠন, মিটিং, মিছিলে ইংরেজ বিদ্বেষ প্রচার ইত্যাদি কাজে নীরব সমর্থনের জন্য সরকারি তহবিলে একশত টাকা জরিমানা দিতে হয়েছে। গ্রামের আরও দশ বারো জনকেও নিজ সামর্থ অনুযায়ী এই পিটুনি কর দিতে হয়েছে। রবিদাস সম্প্রদায়ের ষণ্ডামার্কা সর্দার সেদিন চিৎকার করতে করতে যতিবাবুর অনুগামী হয়েছে, তাঁর উপরও আষ্টআনা জরিমানা ধার্য হয়েছে। উঁকিঝুকি মারতে দেখা গেছে পঞ্চায়েত মৌলবিকে, ভোরবেলা তাঁর প্রিয় বাবুকে ক্ষৌরী করতে এসেছিল চন্দ্রবৈদ্য বুড়া, ভাটি থেকে সুদৃশ্য ধপ্ধপে পোশাক নিয়ে এসেছিল শুক্লবৈদ্য। থানার পেয়াদা এসে তালিকা ধরে সবার উপর আষ্টআনা করে জরিমানা আদায় করে নিয়ে গেছে। দেখি ‘বন্দে মাতরম’ বলে আর কে চেঁচায়? রেহাই পান নি বিশ্বেশ্বর পণ্ডিত, রোহিনী চক্রবর্তী এবং বাজারের মহাজনগোষ্ঠীও। ইদানীং এদের প্ররোচনায় গ্রামে বিবাহের কুঞ্জে সপ্ত প্রদক্ষিণের সময় প্রেমধ্বনির পরিবর্তে সবাই ‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনি তোলে, এটা কি গভর্নমেণ্টের কানে যায় না ওরা ভেবেছে?
রায়বাহাদুর চিঠি লিখে মোবেশ্বর আলিকে পাঠালেন জেলের অফিসে। তাঁকে খুব বুঝিয়ে দেবার প্রয়োজন নেই। জেলের সেপাই সান্ত্রিরা সবাই তাঁকে এক ডাকে চেনে। এই তে। এই জেলখানা থেকেই রায়বাহাদুর তাঁকে সংগ্রহ করেছেন। এর পূর্বপুরুষ কোন এক কালে কাছারি ছিল। ধর্মান্তরিত হবার পর এদিকে এসে জ্ঞাতিগোষ্ঠী সহ সবাই কয়েক পুরুষ ধরে বাংলাভাষী। খুব নিবিড় ভাবে দেখলে চেহারায় জনজাতীয় চরিত্রলক্ষণ বোঝা যায়। আদিনিবাস নাকি নাগাল্যাণ্ডের ডিমাপুর, তাই স্থানীয় মুসলিমরা আড়ালে আবডালে এদের নাগা বলেও অভিহিত করে, এমনকি এদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্বন্ধ করার আগে বিস্তর চিন্তা ভাবনায় কালাতিপাতও করে। মসজিদের বড় মিঞাঁসাব মানুষকে বোঝান,