২৪
যতীন্দ্রমোহন যে রায়বাহাদুরের সুপারিশে মুক্তি চাইবে না এটা রায়বাহাদুর যেমন জানতেন তেমনি শিলচরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সহ কাছাড়ের উকিল এবং কংগ্রেস নেতৃবর্গও জানতেন। আর তাঁর তো এখানে এসে সারা আসামের কামরূপ, নওগাঁ, লখিমপুর, জোড়হাট এবং সিলেটের বাঘা বাঘা সংগ্রামী বন্দিদের পেয়ে মনে হল এই জেলের জীবন যেন একটা আশীর্বাদ। উধারবন্দের জমিদারপুত্র সনৎকুমার দাস, শিলচরের কালীমোহন দেবের দামাল পুত্র সতীন্দ্রমোহন এবং স্বয়ং নিজে—এই তিন জনের মধ্যে হল প্রগাঢ় বন্ধুত্ব। সতী-যতী-সনৎ এই ত্রয়ীর সঙ্গে এসে জুটলেন লক্ষীপুরের সদা হাস্যময় রসিক বস্ত্র ব্যবসায়ী গঙ্গাদয়াল দীক্ষিৎ। এ পশ্চিমা ব্রাহ্মণ বিগত দিনগুলোতে ব্যবসায়ের ক্ষতি স্বীকার করেও উধারবন্দলক্ষীপুর-জয়পুর-রাজাবাজার ছাড়া আরও অন্য চা বাগিচার আশপাশে ঘোরাঘুরি করে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে বিদেশি জিনিস বর্জন, মদ্য নিবারণ আর চরকার প্রচার করে ইংরেজ সিপাইদের কোপদৃষ্টিতে পড়ে এখন কারাগারের অন্তরালে।
—তা ভালোই হোল। কুছু দিন তো আরাম করকে খানা পিনা মিলেগা। ঔর ইতনা বড়া বড়া আদমি কো সাথ বৈঠনা! হে ভগোমান তুনে বহুত আচ্ছা কাম কিয়া,
বলে এক গাল হাসি।
ক’দিন পরে এলেন ইরমান মিত্রা বড়ভুঁইয়া। গঙ্গাদয়াল অবশ্য বেশিক্ষণ চুপ করে থাকতে পারেন না। এক টানে হাত ধরে পাশে এনে বলেন,
—চলো, আসামি বাবুদের সাথে বাতে করেগা।
বয়ঃজ্যেষ্ঠ নেতা তরুণরাম ফুকন, কুলধর চালিহা, নবীনচন্দ্র বরদলৈ, বিষ্ণুরাম মেধী জেলে আছেন কয়েকদিন আগে থেকেই। গঙ্গাদয়াল সবার