পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
৯৩

সঙ্গেই আগ বাড়িয়ে দোস্তি করতে ওস্তাদ। তবে যতি আর সনৎ ওকে একটু সামলে রাখতে চান। ওঁরা অনেক বড়ো মাপের মানুষ, কী বলতে কী বলবে কে জানে। তাঁর তো মুখে কোন রাখ ঢাক নেই। প্রথমে জেলের ভেতর যে সুখের স্বপ্ন দেখেছিল, এখন বুঝল আসল ব্যাপারটি তেমন নয়। পিছনে যদি সব সময় সেপাই লেগে থাকে, জেলের নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে পা ফেলা নিষেধ, খাবারদাবারও বিশেষ সুবিধার নয়, তবে আর সুখ কোথায়? শীতের রাতে যে একটু আরাম করে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাব এরও জো নেই।

 —হায় রে, বাজারে বাজারে কত ভারি কম্বল, রাগ ফিরি করলাম, এখন জেল সরকারের মিনি মাগনা হালকা পাতলা রাগ, ও ভি ইতনা ছোটা! লে হালুয়া, উসকা উপর সাঁজ সবেরা কাম ভি করনা হ্যায়।

 তাঁর এ ফিরিস্তি শুনে তরুণরাম ফুকন কেবল হাসেন। তিনি বলেন,

 —সন্ধ্যার সময় এসো। আমরা প্রেয়ারের পারমিশন নিয়েছি। এলে তোমাদের সব কথাও শোনা যাবে, হাসি গান কীর্তনও হবে। কী বল যতীন্দ্র, সতীন্দ্র, সনৎবাবু?

 এরা সমস্বরে অনুযোগ করছে, এখন নাকি কপি ক্ষেতে কাজ করতে হবে।

 তরুণরাম হাসতে হাসতে বলেন,

 —তা ভালোই তো। এই সুযোগে শরীরচর্চাও হয়ে যাবে। আমাকেও ডেকে নিও।

 এরা বুঝল, এসব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিব্রত হবার মানুষ তিনি নন। বন্ধুদের আড়ালে নিয়ে গঙ্গাদয়াল যা বলার বলে দিল। পরদিন জেলের সেপাই, সর্দার, সুপারভাইজারদের সে কী হম্বিতম্বি,

 —দেখুন, এরা কী ক্ষেতিই না করিয়েছে হামদের বাগানে।