কী হয়েছে? ওরে বাবা, সব ক’টা ফুলকপি, বাঁধাকপির গোড়া কেটে দিয়েছে। আর মাত্র ক’টা দিন পরেই কেমন খাওয়ার লায়েক হয়ে যেত। সনৎকুমারকে সন্দেহ করে সর্দার কিছু একটা বলতে গেলে আগ বাড়িয়ে গঙ্গাদয়াল বলে উঠল,
—দেখিয়ে জি, এরা সব জমিদারের লেড়কা। কোনও দিন ইসব কাম করতি হয়নি। কী করে জানবে কোনটাকে বোলে কুড় দেওয়া আর কোনটাকে ঔর কুছ।
সর্দার বুঝল এ সব এই ব্যাটারই কর্ম। ডেকে আনল সুপারভাইজারকে। নাম লিখে বড়া সাহেবের কাছে কমপ্লেন পাঠাতে হবে।
-ক্যা নাম হ্যায় তুমহারা?
-আজ্ঞে, পেহেলা তো থা গঙ্গাদয়াল দীক্ষিৎ। আভি তো হ্যায় শ্বেতম্লেচ্ছ উচ্ছেদং দীক্ষিৎ গঙ্গাদয়াল।
কারও মুখে কোন কথা নেই। সুপারভাইজার বার কয়েক ‘ক্যা বলা’, ‘ক্যা বলা’ বলে খাতা পেন্সিল পকেটে পুরে অকুস্থল থেকে পালিয়ে বাঁচে। এই নাম লিখতে হলে যে কলম তিনখানাই ভাঙবে। এরপর সবাই মিলে এক চোট হাসি।
সন্ধ্যাবেলা মাটিতে পাটের বস্তার উপর কাপড় বিছিয়ে দশ বারোজন বসেছেন। এখানে নিয়ম করে গীতা, চণ্ডী এবং কোরান পাঠ ও আলোচনা হয়। শুধু কি তাই? না আরও অনেক কিছুও? তরুণরাম জেনে গেছেন যতির গানের গলা ভাল। তাঁর উৎসাহেই গান শুরু হল,
জাগো ভারতবাসীরে,
আর কত ঘুমাবি রে
বদন ভরিয়া বলো বন্দে মাতরম।
(ভাইরে ভাই) জননী আর জন্মভূমি