পর আরেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ অভিনন্দন জানানোর অজুহাতে তাঁর কাছারিতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। শিলচর শহরে কয়েকটি ছাপাখানা হয়েছে, আর এখান থেকে ছাপিয়ে গদ্যে পদ্যে অভিনন্দন পত্রও নিয়ে আসছেন অনেকে। তিনি তো জানেন, এসবের পেছনে একটা উদ্দেশ্য আছে। তবে হেড়ম্ব রাজসভার মন্ত্রিত্ব গেলেও ব্রিটিশরাজ প্রদত্ত এ পদ যদি তাঁকে প্রজাদের কোন মঙ্গল করতে সহায়তা করে তবেই তিনি তৃপ্ত। অবশ্য স্বদেশিরা যদি সাহেবদের দেশ থেকে বিতাড়ন করে, বা আদৌ যদি এরা সফল হয় তবে পরিস্থিতি কী হবে কে জানে। কিন্তু এ মুহূর্তে রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, পুলিশ প্রতিরক্ষা এবং কৃষির উন্নতিকল্পে কিছু কাজ করিয়ে নেওয়া যে আশু প্রয়োজন নিজ গ্রামে স্থাপিত রাজা স্কুলের আরও কিছু কাজ করা প্রয়োজন, ‘শিক্ষাভাণ্ডার’টিও সমৃদ্ধ করা দরকার। মাথার মধ্যে আরও কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠার চিন্তাও রয়েছে। লক্ষীপুর মৌজায় অন্তত একটি পাঠশালা আর একটি এম-ই স্কুল স্থাপনের যে খুব প্রয়োজন। দ্বিতীয়বার চিফ কমিশনারের দায়িত্ব নেওয়ার পর মহামান্য আর্চডেইল আর্ল সাহেবকে অভিনন্দনসূচক পত্রে এ প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে রাখলেন। সাহেবও ধন্যবাদ জানিয়ে বিপিনচন্দ্রের জনকল্যাণমূলক কাজের পরিকল্পনায় যথেষ্ট উৎসাহ দেখালেন।
সাহেবের আমন্ত্রণ পেয়ে একটি সৌজন্যমূলক সাক্ষাতের জন্য বিপিনচন্দ্র কয়েকদিনের জন্য শিলং শৈল রাজধানী নগরীতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সিলেট থেকে ছাতক হয়ে মানুষের কাঁধে চড়ে একটা সহজ রাস্তা আছে। কিন্তু মানুষের কাঁধে চড়ে? না বাবা। তবে আয়োজনটি সুন্দর। একটি হাতলওয়ালা কাঠের চেয়ার বিশেষ, নাম থাবা। খাসিয়া পালোয়ান এ থাবাটি নিজ স্কন্ধে স্থাপন করলে আলাদা একটি সিঁড়ি বা আর কিছুর সাহায্যে যাত্রী এতে চড়ে বসেন। বাহকের কাঁধের দুই দিকে ভার সমান ভাবে