পাতা:ষোল আনি (জলধর সেন).djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোল-আনি

না, না, ওগো, আমি কোথাও যেতে পারব না—যাব না গো! আমি এই সুবর্ণপুরেই মরব। তোমরা জান না, আমি নয় বছর বয়সের সময় এই সুবর্ণপুরে এসেছি, আর এতকাল এখানেই আছি, —কোন খানেই ত যাই নাই। এখানেই আজ আমার শেষ হবে। তিনি যে আমাকে এই ঘরে এনে তুলেছিলেন! আমি কি এ ঘর ছেড়ে যেতে পারি। না, না—আমি কোথাও যাব না; আমি আজ এই ঘরে—ঐ যে তিনি এসেছেন—ঐ যে তিনি আমার সম্মুখে দাঁড়িয়ে। আমি এই ঘরের মধ্যেই মরব। আজই আমার যাবার দিন! তোমরা কেউ আমাকে বাধা দিও না—দিও না। কি বলছ—সুহার, হ্যাঁ, সুহার! তা—আমি ওকেও নিয়ে যাব। ওর গলা-টিপে মেরে ফেলে তার পর আমিও মরব। ঐ শোন না তোমরা, তিনি যে সেই কথাই বল্‌ছেন। আমি কোন দিন তাঁর কোন কথা অমান্য করি নি; আজও তাঁর কথা-মতই কাজ করব। তোমার পায়ে পড়ি গিন্নি! আমাদের নিয়ে যেও না। তোমরা সরে যাও—তোমরা আমাদের ছেড়ে দেও; আমরা মায়েঝিয়ে তাঁর কাছে চলে যাই। তিনি ত ঘৃণা করছেন না—তিনি যে কোলে তুলে নিতে ডাক্‌ছেন। যাই গো—যাই—আর কি দেরী করা যায়—তিনি যে ডাক্‌ছেন—ঐ শোন।” বলিয়াই মানদা অচৈতন্য হইয়া পড়িলেন। তাঁহার এই অবস্থা দেখিয়া সুহার কাঁদিয়া উঠিল “মা, ও মা! মা যে কথা বলে না।”

রমাসুন্দরী তাড়াতাড়ি উঠিয়া বাহির হইতে জল আনিয়া মানদার মুখে-চোখে মাথায় ছিটাইয়া দিতে লাগিলেন। তাঁহার

৩২