পাতা:ষোল আনি (জলধর সেন).djvu/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোল-আনি

করে গেলে সবাই একেবারে হাঁ হাঁ করে উঠ্‌বে। তাই দেখ বাছা, তোরা আছিস্‌ গ্রামের পুরুষ-মানুষ; তোরা লেখাপড়া জানিস; তোদেরও বুদ্ধি-বিবেচনা আছে; কিন্তু যে কাজটী পড়বে, অমনি ডাক্‌ এই শ্যামা বামণীকে। এক কাল ছিল, যখন এসব পেরে উঠতাম; এখন বয়সও হয়েছে, এখন কোথায় বসে ঠাকুর দেবতার নাম করব, না কে কোন্‌ মুখুয্যে তার ভাই বৌয়ের উপর অত্যাচার করল, এখন চললাম তার সালিস্ করতে।”

তারকের স্ত্রী বলিল “তা হলে কথাটা সত্যি না কি? ও মা, কি ঘেন্না, কি লজ্জা! আমি অমনি একটু আভাস পেয়েছিলাম। তা যাক্‌গে, তুমি ঠিক্‌ বলেছ, ও-সব লজ্জার কথা, কলঙ্কের কথা গেরস্তর বৌদের না শোনাই ভাল! কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাক্‌বে মা, তাড়াতাড়ি যদি না থাকে ত আসন এনে দিই, একটু বোসো।”

“না, না, আর বস্‌বার সময় নেই” বলিয়া শ্যামা ঠাকুরাণী ভট্টাচার্য্য-বাড়ী হইতে বাহির হইলেন। সদর রাস্তায় উঠিবার সময়ই দেখিলেন, মুখুয্যেপাড়ার দিক হইতে হরিশ গাঙ্গুলীর ছেলে মহিম আসিতেছে। তাহাকে দেখিয়াই শ্যামা ঠাকুরাণী রাস্তার পার্শ্বে ই দাঁড়াইলেন। মহিম তাঁহাকে দূর হইতেই দেখিয়াই একটু দ্রুতগতিতে আসিয়া বলিল “পিসিমা, আমি যে তোমার বাড়ীতেই যাচ্ছিলাম।”

শ্যামা ঠাকুরাণী বলিলেন “আমার বাড়ীতে! কেন, তোর কিছু দরকার আছে না কি?” এই বলিয়াই তিনি নিজের বাড়ীর দিকে মুখ ফিরাইলেন, যেন বাড়ীর দিকেই যাইবেন।

৪৬