পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

একদিন ষ্ট্যালিন ও ট্রট‍্স্কির বিরোধের মীমাংসা হইল। ষ্ট্যালিন বলিলেন, ‘আমরা অতীতের মতভেদ বিস্মৃত হইব এবং বন্ধুভাবে একত্রে কাজকর্ম্ম করিব।’ কিন্তু ট্রট্‌স্কি এই প্রতিশ্রুতিকে কোন মর্য্যাদা দেন নাই।

 লেনিন রোগশয্যা হইতে আর উঠিলেন না। সমগ্র রাশিয়াকে শোকাচ্ছন্ন করিয়া মাত্র ৫৪ বৎসর বয়সে ১৯২৪ সালের ২১শে জানুয়ারী তিনি চির নিদ্রায় অভিভূত হইলেন। তাঁহার মৃত্যুসংবাদে সমগ্র রাশিয়া বিস্মিত ও বিষণ্ণ হইল। ধনিক সভ্যতা ও বুর্জোয়া শ্রেণীর চিরশত্রু লেনিনের মত বিপ্লবী নেতা পৃথিবীর ইতিহাসে আর দেখা যায় নাই। জনসাধারণের এত শ্রদ্ধা, ভালবাসা, প্রীতি ও বিশ্বাস আর কোন নেতাই অর্জ্জন করিতে পারেন নাই। কৃষক ও শ্রমিকদের মনের সত্য পরিচয় লেনিন পাইয়াছিলেন এবং সেই কারণেই তিনি কখনও তাহাদের প্রতি বিশ্বাস হারান নাই। মার্কসবাদের পাষাণ-কঠিন ভিত্তির উপর দাঁড়াইয়া লেনিন শ্রমিক সম্প্রদায়ের শক্তি ও ভবিষ্যতের প্রতি সীমাহীন বিশ্বাস পোষণ করিতেন। জীবনে কোনদিন তিনি বিপ্লব এবং সর্ব্বসাধারণের জয়ের উপর ভরসা হারান নাই। কিশোর বয়স হইতে অন্তিম মূহূর্ত্ত পর্য্যন্ত তিনি পৃথিবীর শ্রমিক সম্প্রদায়ের মুক্তি-সংঘর্ষের একনিষ্ঠ পূজারী ছিলেন।

 শোকে মুহ্যমান সমগ্র রাশিয়ার জনসাধারণ অনাথ বালকের মত কাঁদিয়া উঠিল। শোকার্ত্ত রাশিয়ার সে চিত্র বহু লেখক লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। একজন নিরপেক্ষ আমেরিকান সাংবাদিকের গ্রন্থ হইতে আমরা তাহাব কিঞ্চিৎ পরিচয় দিতে চেষ্টা করিব।

 ২২শে জানুয়ারী বেলা ১১-৩০ টার সোভিয়েট কংগ্রেসের সভাপতি কালিনিনের নেতৃত্বে কংগ্রেসের অধিবেশন হইল। কালিনিনের নির্দ্দেশে

৯২