ষ্ট্যালিন
সকলে দণ্ডায়মান হইলেন। সোভিয়েট শোকবাদ্যের করুণ সুর থামিয়া গেলে অশ্রুপূর্ণ লোচনে ভগ্নস্বরে কালিনিন কহিলেন, ‘আমি আপনাদের নিকট আমাদের প্রিয় ভ্লাডিমির ঈলিচের মৃত্যুসংবাদ জ্ঞাপন করিতেছি। গতকল্য তিনি পুনরায় পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন এবং’ কালিনিন স্তব্ধ হইয়া নতমুখে দাঁড়াইলেন এবং যেন সমস্ত শক্তি একত্রিত করিয়া উচ্চারণ করিলেন, ‘তিনি মৃত।’ সমগ্র জনতা অশ্রুবর্ষণ করিতে লাগিল। দুই একজন বলশেভিক নেতা হস্তোত্তলন করিয়া জনতাকে শান্ত করিবার চেষ্টা করিলেন।
লক্ষ লক্ষ নরনারী তীব্র শীত রজনীর বরফপাত উপেক্ষা করিয়া জননায়কের চির নিদ্রায় অভিভূত মৃতদেহ প্রদক্ষিণ করিতে লাগিল। বিশাল জনতা ঘনসন্নিবিষ্ট হইয়া দাঁড়াইয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করিবার পর তাহাকে দর্শন করিতে লাগিল। সপ্ত দিবা-নিশি অতিবাহিত হওয়ার পর ২৭শে জানুয়ারী অপরাহ্নে ষ্ট্যালিন, কামেনফ, জিনোভিফ, বুখারিন, রাইকফ এবং কালিনিন রক্তবস্ত্রে আবৃত লেনিনের কফিন স্কন্ধে লইয়া ক্রেমলিন প্রাসাদ হইতে বহির্গত হইলেন। লাল ময়দানে লেনিনের স্মৃতিমন্দিরের জন্য চিহ্নিত স্থানে মৃতদেহ আসিল। আন্তর্জাতিক সঙ্গীত গীত হইতে লাগিল। শূন্য ডিগ্রির ৩৫° নীচের শীতে লক্ষ লক্ষ নরনারী পথের দুই ধারে রক্তপতাকা হস্তে দাঁড়াইয়াছিল। লালপল্টন শোকগম্ভীর পদক্ষেপে পাহারা দিতেছিল। লেনিনের শিষ্যগণ কোন আড়ম্বরঅঙ্গুষ্ঠান করেন নাই, কোন বক্তৃতা হয় নাই। একটা জাতির শোক যেন বেদনায় নিস্তব্ধ হইয়া শীতের তুহিনের মতই জমিয়। গিয়াছিল। মস্কো নগরীর কি রাশিয়ান, কি বিদেশী সকলেই লক্ষ্য করিল, ট্রট্স্কি অনুপস্থিত। ট্রট্স্কি তাঁহার আত্মজীবনীতে এই অনুপস্থিতির একটা কৈফিয়ৎ দিবার
৯৩