সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পিতামাতা শিশুর ভবিষ্যৎ জীবন সম্বন্ধে চিন্তিত হইলেন এবং পরামর্শ করিয়া স্থির করিলেন যে ‘সোসো’ ধর্ম্মযাজক হইবে। সাত বৎসর বয়সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করিয়া ষ্ট্যালিন জর্জিয়ান ও রাশিয়ান ভাষা শিক্ষা করিতে লাগিলেন। লেনিনের মতই ষ্ট্যালিন পরিশ্রমী ও উৎসাহী ছাত্র ছিলেন এবং প্রত্যেক পরীক্ষায় সর্ব্বোচ্চ নম্বর পাইতেন। পাঠশালার শেষ পরীক্ষায় তিনি কৃতিত্বের সহিত উত্তীর্ণ হইয়া সার্টিফিকেট পাইয়াছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর, মাতাব সহিত টিফ্লিসে আসিয়া ১৪ বৎসর বয়সে (১৮৯৪) তিনি খৃষ্টান পাদ্রীদের স্কুলে ভর্ত্তি হইলেন। টিফ্লিস সহরে ইউরোপীয় শিক্ষা সংস্কৃতির প্রভাব সুপরিস্ফুট, ধর্ম্ম-পুস্তকের মধ্যেই তাঁহার চিত্ত. ও চিন্তা আবদ্ধ রহিল না; নব্য ইউরোপের নব নব চিন্তাধারা তাঁহাকে আকর্ষণ করিল। সংবাদপত্র, বিভিন্ন পুস্তিকা এবং শিক্ষিত যুবকগণের সহিত আলোচনার ফলে তিনি জর্জীয় জাতীয়তাবাদ ও বৈপ্লবিক চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত হইলেন। ডারুইন ও মার্ক্সের চিন্তাধারা তাঁহার মনে গভীর রেখাপাত করিল। ষ্ট্যালিন নিজে বলিয়াছেন, “পনর বৎসর বয়সেই আমি বৈপ্লবিক আন্দোলনে যোগদান করি এবং ট্রান্স-ককেসিয়ার রুশীয় মার্কসপন্থী গুপ্তদলগুলির প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন হইয়া পড়ি। এই দলগুলি আমার উপর অসামান্য প্রভাব বিস্তার করে এবং তাহার ফলে আমি নিষিদ্ধ সাহিত্য পাঠে অভ্যস্ত হইয়া উঠি।”
টিফ্লিস্ বিদ্যালয়ে ধর্ম্মপুস্তক ছাড়াও তিনি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ক পুস্তক পাঠ করিতেন। বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে নিষিদ্ধ পুস্তিকা ও ইস্তাহারাদি প্রবেশ করিতেছে সংবাদ পাইয়া ধর্ম্মযাজকগণ শঙ্কিত হইলেন। মাঝে মাঝে পুলিশ আসিয়া খানাতল্লাসী