পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

কালে বহু তথ্য ও যুক্তিপূর্ণ পুস্তিকা ও গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। ১৯২৬-র জানুয়ারীতে ঐগুলি “Problems of Leninism” নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থখানি সোভিয়েট রাশিয়ায় এবং পরবর্ত্তীকালে সমগ্র জগতে লক্ষ লক্ষ নরনারী পাঠ করিয়াছে। রাজনৈতিক চিন্তা ও কর্ম্মধারার ক্রমবিকাশ এবং বৈপ্লবিক গণ-আন্দোলন পরিচালনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিশ্লেষণে ষ্ট্যালিন তাঁহার পাণ্ডিত্য ও প্রতিভার পরিচয় দিয়াছেন।

 কেবল তত্ত্ব ব্যাখ্যা করিয়া নহে, একটি দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্ত্তন যে সম্ভব, পার্টির সহায়তায় ষ্ট্যালিন তাহা প্রমাণ করিতে আত্মনিয়োগ করিলেন। রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হইতেছে বটে, কিন্তু বাহিরে ধনতন্ত্রও মহাযুদ্ধের টাল সামলাইয়া লইতেছে; ট্রট্‌স্কি-পন্থীরা বলিলেন, ইহার ফলে রুশ বিপ্লব ব্যর্থ হইয়া যাইবে। ষ্ট্যালিন উত্তর দিলেন, “আমরা আত্মস্থ হইবার দুইটি চেষ্টা দেখিতেছি। এক প্রান্তে ধনতন্ত্র নিজেদের সামলাইয়া প্রতিষ্ঠা লাভ ও অধিকতর বিস্তারের পথ দেখিতেছে, অন্য প্রান্তে সোভিয়েট-ব্যবস্থা নবলব্ধ জয়কে আয়ত্তে আনিয়া অধিকতর বিজয়ের দিকে অগ্রসর—কে জয়লাভ করিবে ইহাই প্রশ্ন। এই দুইটি ব্যবস্থা পাশাপাশি কেমন করিয়া চলিবে এবং তাহার পরিণাম কি? কারণ আজ সুসংহত সর্ব্বগ্রাসী ধনতন্ত্র আর নাই। জগত আজ দুই পৃথক শিবিরে বিভক্ত। বৃটিশ ও আমেরিকান মুলধনের নেতৃত্বে চালিত ধনতন্ত্র এবং সোভিয়েট ইউনিয়নের নেতৃত্বে চালিত সমাজতন্ত্র। এই দুই শিবিরের আপেক্ষিক শক্তিদ্বারাই আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ক্রমশঃ অধিক পরিমাণে নিয়ন্ত্রিত হইবে।

 “আমরা কোন পথে চলিব? আমরা কি আমাদের দেশে সমাজতন্ত্র

১০২