পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

লাগিলেন। বিরুদ্ধতা করিতে হইলে মতবাদের অস্ত্রাগার হইতে পছন্দ মত অস্ত্রশস্ত্রাদি সংগ্রহ করিতে ট্রট্‌স্কির শক্তির অভাব ছিলনা। সর্ব্বত্র দোষ দর্শন করিবার প্রবৃত্তি দমন করিতে না পারিয়া তিনি নিজেকে অধিকতর বিপ্লবী বলিয়া প্রচার করিতে লাগিলেন। তাঁহার চিন্তার এই গতি, এই মানসিক অভ্যাস এবং বুদ্ধির অস্থিরতা, তাঁহার রাজনৈতিক মতবাদ, কম্যুনিষ্ট পার্টির নিকট অশ্রদ্ধেয় হইয়া উঠিল। তিনি ক্রমে নিম্নমধ্যশ্রেণীর সুবিধাবাদীর নৈতিক ভীরুতা ও বুদ্ধির ভণ্ডামী অবলম্বন করিয়া সংস্কার-পন্থী হইয়া উঠিলেন, অথচ সঙ্গে সঙ্গে মার্কসবাদের মুখোসও তিনি ব্যবহার করিতে লাগিলেন। রাষ্ট্রে সুপ্রতিষ্ঠিত একটা পার্টির কাজ এইরূপ বিতর্কমূলক নহে। বিরুদ্ধবাদীরা আত্মসমালোচনা ছাড়িয়া আত্মবিরোধে প্রবৃত্ত হইলেন। ইহার কুফল হইল এই যে তাঁহারা সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ হইতে ক্রমে পৃথক হইয়া পড়িলেন। এমনকি গণতান্ত্রিক উপায়েও তাঁহারা সামঞ্জস্য বিধান করিতে অপারগ হইলেন। অবশেষে যে কোন উপায়ে ক্ষমতা হস্তগত করিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন।

 এইরূপ একটা সঙ্কট আসিতে পারে, লেনিন ইহা পূর্ব্বেই অনুমান করিয়াছিলেন এবং কম্যুনিষ্ট পার্টির দশম কংগ্রেসে তাঁহার চেষ্টায় নিম্নলিখিত প্রস্তাবটী গৃহীত হইয়াছিল; “পার্টির প্রত্যেক সদস্যকেই লক্ষ্য রাখিতে হইবে যে পার্টির ভুলগুলির সমালোচনা করিবার, পার্টির মূলনীতি বিশ্লেষণ করিবার, কার্যক্ষেত্রে লব্ধ অভিজ্ঞতা বিচার করিবার এবং বিচার-বিশ্লেষণ করিয়া ভুলের প্রতিকারোপায় নির্ণয় করিবার স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ইহা হইতে যেন কোন ব্যক্তি বিশেষের নির্দ্দেশ মুখ্য হইয়া না উঠে এবং কোন ক্ষুদ্র দল যেন স্বতন্ত্রভাবে

১০৬