ষ্ট্যালিন
প্রচলিত সমাজ-ব্যবস্থা রক্ষার জন্য যে ভাবে ধনতান্ত্রিক দেশগুলিতে নিয়ন্ত্রিত হয়, তাহার ধারা সম্পূর্ণ বদলাইয়। গেল। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শাসক, শিক্ষক, সাংবাদিক প্রভৃতি ধনতান্ত্রিক দেশে যে ভাবে মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণীর ক্রীতদাসে পরিণত হয়, সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ায় তাহার প্রয়োজন না থাকায় তাহারা স্বাধীনভাবে জনসেবায় প্রবৃত্ত হইল।
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার এই অভূতপূর্ব্ব সাফল্যে রাশিয়ার প্রধান সমস্যা কৃষক ও কৃষিকার্য্যের সমস্যা সম্পূর্ণরূপে সমাধান হইয়াছিল একথা বলা যায় না। শ্রমিক-সমস্যা ও কৃষক-সমস্যা এক বস্তু নহে। বিপ্লবের পর সমাজতান্ত্রিক পুনর্গঠন, রক্ষণশীল ও আত্মকেন্দ্রিক কৃষক সমাজের নিকট হইতে প্রবল বাধা পাইতে লাগিল। লেনিন বহু পূর্ব্বেই বলিয়াছিলেন, সমাজতান্ত্রিক পুনর্গঠনের প্রধান বাধা এই যে, রাশিয়া মুখ্যতঃ কৃষিপ্রধান দেশ এবং জমির মালিক ছোট ছোট কৃষকেরা সমাজতন্ত্রবাদ অপেক্ষা ধনতন্ত্রবাদেরই পক্ষপাতী। এই বাধা দূর করিবার জন্য ষ্ট্যালিন অগ্রসর হইলেন। বড় বড় জমিদারী বাজেয়াপ্ত করিয়া লইতে কিছুই অসুবিধা হইল না, কেননা জমিদার ও বৃহৎ কৃষিক্ষেত্রের অধিকারী বুর্জোয়া শ্রেণীর মালিকানাসত্ব বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গেই লোপ পাইয়াছিল এবং কালের গতি বুঝিয়া তাঁহারাও নূতন ব্যবস্থার সহিত সামঞ্জস্য করিয়া জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিখণ্ডের অধিকারী লক্ষ লক্ষ কৃষক তাহাদের পুরুষানুক্রমিক মমত্ব লইয়া স্ব স্ব জমি আঁকড়িয়া পড়িয়া রহিল এবং কিছুতেই সঙ্ঘবদ্ধভাবে কাজ করিতে সম্মত হইল না। কিছু বলপ্রয়োগ হইল, তাহার ফল হইল বিপরীত। অতিরিক্ত উৎসাহী সাম্যবাদীরা গ্রামে গ্রামে গিয়া নূতন ব্যবস্থা প্রবর্ত্তনের চেষ্টায় কৃষকগণকে প্রায় ক্ষেপাইয়া তুলিল। ষ্ট্যালিন পিছু
১১৩