ষ্ট্যালিন
হটিলেন। ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধা এবং লাভ সম্পর্কে কৃষকদের মগজে নূতন তত্ত্ব ঢুকান কঠিন। কিন্তু এই কঠিন কার্য্য ষ্ট্যালিনের নিকট কঠিন মনে হইল না। তিনি বলিলেন যে, কৃষকদিগকে সমাজতন্ত্রের অধীনে আনিতে হইলে তাহাদের বুঝাইয়া দিতে হইবে যে, সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেই তাহাদের আর্থিক উন্নতি সম্ভবপর। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিখণ্ড বিলুপ্ত করিয়া বৃহৎ কৃষিক্ষেত্রে কলের লাঙ্গলে চাষের ব্যবস্থা প্রবর্ত্তন করিতে হইবে। জমিদারদের বড় বড় কৃষিক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা প্রবর্ত্তিত হইল। কৃষকেরা দেখিল তাহাদের প্রাচীন পন্থা অপেক্ষা এই অভিনব পন্থায় বহুগুণ অধিক শস্য উৎপন্ন হইতেছে। যাহারা ভূমিহীন ক্ষেত মজুর, যাহাদের নাই বলিতে কিছুই নাই তাহারা কপাল ঠুকিয়া সার্ব্বজনীন কৃষিক্ষেত্রে যোগদান করিল। মধ্যশ্রেণী ও শোষক-শ্রেণী বিলুপ্ত হওয়ায় কৃষক ভূস্বামীরা কিছু সচ্ছলতার সন্ধান পাইয়াছিল। কাজেই তাহারা প্রথমতঃ নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি সার্ব্বজনিক কৃষিক্ষেত্রে বিসর্জ্জন দিতে রাজী হইল না, কিন্তু ক্রমে তাহাদের সন্দেহ দূর হইল। ১৯২৯ সালে শতকরা ৪ ভাগ, ১৯৩০ সালে ২৩ ভাগ, ১৯৩১ সালে ৫২ ভাগ, ১৯৩২ সালে ৬১ ভাগ ও ১৯৩৩ সালে ৬৫ ভাগ, কৃষক সার্ব্বজনিক কৃষিক্ষেত্রে এবং সমবায় পদ্ধতিতে কৃষিকার্য্যের সরিক হইল। ১৯৩৪ সালের শেষ ভাগে কৃষির উন্নতি এমন একটা অবস্থায় গিয়া পৌঁছিল যে, সোভিয়েট গভর্ণমেণ্ট রুটি ও আটার বাঁধা বরাদ্দ বাতিল করিয়া দিলেন। কৃষিকার্য্যের উন্নতির সুবিস্তৃত ইতিহাস আলোচনা এখানে হয়ত অপ্রাসঙ্গিক হইবে, কিন্তু এই বৃহৎ সাফল্যই ষ্ট্যালিন এবং তাঁহার সহকর্ম্মিগণের গঠনমূলক প্রতিভার প্রকৃষ্ট পরিচয়। বলা বাহুল্য ইহা নিব্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় নাই।
দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৩২—৩৭) লইয়া কার্য্য আরম্ভ
১১৪