ষ্ট্যালিন
সোভিয়েট যুক্তরাষ্ট্রের বিস্ময়কর উন্নতি দেখিয়া ধনতান্ত্রিকগণ চমকিত হইলেন। সমাজতন্ত্রবাদের এই আগ্নেয়গিরির পাশে নিশ্চিন্তে বাস করা তাঁহাদের পক্ষে কঠিন হইয়া উঠিল। অন্যদিকে সোভিয়েটের নেতারাও দেখিলেন, পরস্পর প্রতিবাদী সাম্রাজ্যবাদীরা পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া জগতের শাস্তির বিঘ্ন ঘটাইতে পারে। এই কারণে তাঁহারা আন্তর্জ্জাতিক ব্যাপারে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মধ্য দিয়া অংশ গ্রহণে প্রস্তুত হইলেন। অনেক বিবেচনা করিয়া ইউরোপের বড় কর্ত্তারা রাষ্ট্রসঙ্ঘে সোভিয়েট-প্রতিনিধি গ্রহণ করিতে স্বীকৃত হইলেন। সোভিয়েট-প্রতিনিধি লিটভিনফ নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে যোগ দিলেন এবং প্রথমে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব উপস্থিত করিলেন। সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রনায়কগণ অতটা অগ্রসর হইবার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। তাঁহাদের ভণ্ডামির ফলে নিরস্ত্রীকরণ বৈঠক ব্যর্থ হইল। কিন্তু সোভিয়েট রাশিয়া তাহার শান্তিনীতিতে অটল রহিলেন। প্রথমে চিচেরণ এবং পরে লিটভিনর্ফ কর্ত্তৃক সোভিয়েটের পররাষ্ট্রনীতি সাফল্যের সহিত পরিচালিত হইয়াছে। সপ্তদশ কংগ্রেসে ষ্ট্যালিন বলিলেন, “আমরা জগতে শান্তি রক্ষার একটা প্রধান অংশ; কিন্তু আমাদের চারিদিকে এমন কতকগুলি রাষ্ট্র একত্রিত হইয়াছে যাহারা পুনরায় যুদ্ধ বাধাইয়া তুলিতে চাহিতেছে এবং এই ষড়যন্ত্র ও শাঠ্যের উপর আমাদের কোন হাত নাই।” অর্থাৎ আর একটা সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ যে ঘনাইয়া আসিতেছে সে সম্বন্ধে সোভিয়েট নেতারা নিঃসন্দেহ হইলেন। পূর্ব্বদিকে জাপান এবং পশ্চিমে জার্ম্মানী দুশ্চিন্তার স্থল হইয়া উঠিল। মাঞ্চুরিয়ার জিহোল গ্রাস করিয়া জাপান পূর্ব্ব এশিয়ায় সোভিয়েট-সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করিল। এই সময় ষ্ট্যালিন ঘোষণা করিলেন, “আমরা অন্য কোন দেশের এক হাত জমিও চাহি না,
১১৬