ষ্ট্যালিন
কিন্তু আমাদের দেশের এক যব পরিমিত ভূমিও কাহাকেও দিব না।” ইউরোপের পররাষ্ট্র নীতিতে দুর্য্যোগ ঘনাইয়া উঠিতে লাগিল। সোভিয়েটনেতারা বুঝিলেন, আত্মরক্ষার্থ প্রস্তুত হইবার দিন আসিয়াছে। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ সর্ব্বব্যাপী হইয়া উঠিবার সঙ্গে সঙ্গে বৈপ্লবিক গৃহযুদ্ধ নানা দিক দিয়া আত্মপ্রকাশ করিবে। শান্তিবাদী হইয়াও সাম্যবাদী দল দেখিলেন ঐতিহাসিক নিয়তির এই অনিবার্য্য সম্ভাবনার উপর তাঁহাদের কোন হাত নাই। বিগত মহাযুদ্ধে বিদ্রোহে বিপ্লবে ইউরোপে যেমন ভাবে ভাঙ্গাগড়া হইয়াছে, ভাবী যুদ্ধে তাহা অধিকতর ব্যাপক ও দূরপ্রসারী হইয়া দেখা দিবে। যাহারা সাম্যবাদ-বিরোধিতার নামে মানবের উন্নতির পথ রুদ্ধ করিবার চেষ্টা করিতেছে তাহারাই অগ্রগতিকে অধিকতর দ্রুত করিবে।
১৯৩০-৩৩-এর জগদ্ব্যাপী অর্থসঙ্কটের দিনে শিল্প বাণিজ্যে অতি অগ্রসর দেশগুলিতে যে সঙ্কট দেখা দিল, তাহাতে শিল্পপণ্যের উৎপাদন ১৯২৯ খৃষ্টাব্দের সহিত তুলনায় আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে শতকরা ৬৫ ভাগ, গ্রেটবৃটেনে শতকরা ৮৬ ভাগ, জার্মানীতে ৬৬ ভাগ এবং ফ্রান্সে ৭৭ ভাগ কমিয়া গেল। পক্ষান্তরে ১৯২৯-এর তুলনায় সোভিয়েট রাশিয়ায় পণ্যউৎপাদন ক্রমে বাড়িয়া ১৯৩৩-এ শতকরা ২০১ ভাগ বাড়িল। ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অপেক্ষা সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যে অধিকতর বৈজ্ঞানিক ও উন্নততর তাহা যেমন বুঝা গেল, তেমনি দেখা গেল জগদ্ব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কট সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার উপর কোন প্রভাব বিস্তার করিতে পারিল না। পূর্ব্বকথিত দেশগুলিতে শ্রমিক বেকারের সংখ্যা দাঁড়াইল প্রায় আড়াই কোটী। ক্ষুধা, দারিদ্র্য-দুঃখে তাহারা জর্জ্জরিত হইল এবং ইহার ফলে কোটী কোটী কৃষকের কি দুর্দ্দশা হইল, তাহা সহজেই অনুমেয়।
১১৭