ষ্ট্যালিন
এশিয়ায় তাহাদের নৌ-ঘাঁটিগুলি দৃঢ় ও অস্ত্রসজ্জিত করিতে লাগিল। চীন হইতে ইউরোপ ও আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলিকে বিতাড়িত করাই যে জাপানের অভিপ্রায়, ইহা গোপন রহিল না। জাপান ঐ শক্তিগুলির সহিত প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে প্রবৃত্ত না হইয়া সোভিয়েট রাশিয়ার প্রাচ্য ভুখণ্ডের প্রতি দৃষ্টিপাত করিল। কিন্তু সোভিয়েট রাশিয়া অতি দ্রুত সৈন্য সমাবেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলি শক্তিশালী করায় জাপান মাঞ্চুরিয়ার উত্তরে দৃষ্টিপাত করিতে সাহস পাইল না।
অর্থসঙ্কটে কেবল পূর্ব্ব এশিয়ার মত ইউরোপেও ধনতান্ত্রিক স্ববিরোধিতা তীব্র হইয়া উঠিল। দীর্ঘস্থায়ী কলকারখানা ও কৃষি ব্যবস্থার সঙ্কট, বিপুল বেকারসমস্যা এবং দরিদ্র শ্রেণীর ক্রমবর্দ্ধিত দুরবস্থা শ্রমিক ও কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষের বহ্নি প্রধুমিত করিল। শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণীর মধ্যে বৈপ্লবিক মনোভাব লক্ষ্য করা গেল। বিগত মহাযুদ্ধে ক্লান্ত-শ্রান্ত জার্ম্মানীতেই এই অবস্থা উগ্র হইয়া উঠিল। এংলো-ফরাসী বিজেতার যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ জোগাইতে হৃতসর্ব্বস্ব জার্মানী অর্থনৈতিক সঙ্কটে অধিকতর বিপন্ন হইয়া পড়িল। শ্রমিক শ্রেণী স্বদেশের শাসক ও শোষক এবং বৃটিশ ও ফরাসী বুর্জ্জোয়া শ্রেণীর দাবী—এই দুই চাপে পড়িয়া অস্থির হইয়া উঠিল। ইহার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ দেখা গেল ১৯৩২ সালে জার্ম্মান জনসাধারণ রাইকৃষ্ট্যাগের নির্ব্বাচনে জার্ম্মান কম্যুনিষ্ট পার্টিকে ৬০ লক্ষ ভোট দিয়াছিল। জার্ম্মান বুর্জোয়া শ্রেণী এই ঘটনায় বুঝিলেন যে, বিপদের দিন ঘনাইয়া আসিয়াছে। জার্ম্মানীর সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দল স্থির করিলেন শ্রমিক শ্রেণীর স্বাধীনতা খর্ব্ব করিতে হইবে। অন্যথায় তাহারা বৈপ্লবিক শক্তিগুলির সহিত যোগ দিয়া যে কোন মুহূর্ত্তে অনর্থ ঘটাইতে পারে। অন্য দিকে জার্ম্মানীর ধনিক ও
১১৯